বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৭ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, বিদ্যুৎহীন আড়াই হাজার গ্রাহক

1বন্যায় দেশের ২৭ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির হিসাবে বলা হয় ১০৩টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বন্যা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আড়াই হাজার গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) বলছে, টাকার অঙ্কে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সামান্য হলেও দুর্ভোগ ছিল অনেক বেশি। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বন্যা অনেক দিন স্থায়ী ছিল। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে আবারও পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আরইবি জানায়, এবার দেশের মধ্য এবং উত্তরাঞ্চল বেশি উপদ্রুত হলেও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মাদারীপুর, শরীয়তপুর, বরিশাল এবং খুলনা জেলা ছিল ক্ষতির তালিকায়। এছাড়া দেশের পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরইবি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বন্যায় ২৬ জেলার মোট ৪৬১টি বিদ্যুতের খুঁটি (পোল) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও ৩৮ কিলোমিটার বিতরণ লাইন বিভিন্ন এলাকায় বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ৭২টি ট্রান্সফরমার এখনও বন্ধ আছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৭টি ট্রান্সফরমার।
আরইবি জানায়, এবার বন্যায় তাদের এক কোটি ২৭ লাখ ৩৮ হাজার ৬৫০ টাকা ক্ষতি হয়েছে। তবে এখন সবকিছু প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। বন্যার কারণে অনেক এলাকায় লাইন বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। পানির স্তর বিদ্যুতের তারের অনেক কাছে চলে যাওয়ায় এমনটি করা হয়েছিল যাতে কোনও বিপদ না ঘটে। পানি বেশি থাকায় অনেক লাইন বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে সেসব লাইন আবার চালু করা হয়েছে।
আরইবির একজন কর্মকর্তা বলেন, বন্যায় সবাইকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছিল যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে। এজন্য তেমন বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।
বন্যায় ১০৩ উপজেলায় ১০ হাজার ৩১১ জন আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে ওঠেন। এজন্য আরইবি ২৮১টি আশ্রয়কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। তবে এসব জায়গায় ২৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে আরইবি।
আরইবি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ক্ষতিগ্রস্ত সমিতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে সাতক্ষীরায়। সেখানে এখনও বিদ্যুৎবিহীন আছে ১ হাজার ৯৬০ জন গ্রাহক। এছাড়া কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে ১৭৩ জন গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এর বাইরে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২-এ ১৮, মুন্সীগঞ্জে ৩৬, টাঙ্গাইলে ৯২, মানিকগঞ্জে ২২, ফরিদপুরে ৫০, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুরে ৯ জন করে গ্রাহক, খুলনায় ৪২ এবং শেরপুরে ২টি লাইনে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া যায়নি। সব মিলিয়ে ২ হাজার ৪১৩ জন গ্রাহক এখনও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছেন।
আরইবির সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অঞ্জন কান্তি দাস বলেন, যখন যেখানে পানি নেমে গেছে সেখানেই আমরা সরবরাহ স্বাভাবিক করেছি। ফলে মানুষের খুব বেশি দুর্ভোগ হয়নি। আর মূলত লাইন বন্ধ ছিল দুর্ঘটনা প্রতিরোধে, যাতে মানুষের জানমাল রক্ষা পায়। এখনও যেসব এলাকায় সংযোগ দেওয়া হয়নি সেখানে পানি না নামার কারণে দেওয়া যায়নি। আমরা পানি নেমে যাওয়ার অপেক্ষা করছি। নেমে গেলেই কাজ শুরু করবো।