মুজিব-ইন্দিরা বৈঠক আলোচনার শীর্ষে

dainik bangla (2)(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ওই বছরের ১২ সেপ্টেম্বরের ঘটনা।)

জেনেভা থেকে দেশে ফেরার পথে নয়দিল্লিতে যাত্রাবিরতিকালে হতে চলা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যকার বৈঠক ওই সময়ে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল। কী নিয়ে আলাপ করতে পারেন তারা। ১৯৭২ সালের আগস্ট থেকেই জাতিসংঘে অন্তর্ভুক্তিতে চীনের ভেটো, আবার পাকিস্তানের নানাবিধ উস্কানিমূলক কথাবার্তায় উপমহাদেশের রাজনীতি হয়ে উঠছিল ঘোলাটে। এমন সময় হঠাৎ এই দুই দেশে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক কৌতুহলের জন্ম দিয়েছিল।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার জেনেভা থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ বিমানে নয়াদিল্লি যাবেন। গত ২৬ জুলাই থেকে বঙ্গবন্ধু প্রথমে লন্ডন ও পরে জেনেভায় অবস্থান করছিলেন। ফেরার পথে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেগম মুজিব এবং তার পরিবারের সদস্যরা থাকবেন বলে পত্রিকার খবরে প্রকাশ করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় পৌঁছাবেন এবং দুপুর দেড়টায় ঢাকার উদ্দেশে নয়াদিল্লি ত্যাগ করবেন।

ittefak (1)রাজনৈতিক বিষয় গুরুত্ব পাবে

নয়াদিল্লিতে যাত্রাবিরতিকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় মিলিত হবেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমানের এই প্রথম নয়া দিল্লি সফর। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এটি তার দ্বিতীয় সফর। পাকিস্তানের জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পর ১০ জানুয়ারি লন্ডন থেকে ঢাকা প্রত্যাবর্তনের পথে নয়াদিল্লিতে যাত্রাবিরতি করেন তিনি। ভারতীয় সূত্র মতে, পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশের প্রতি পাকিস্তানের মনোভাব এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চিনের ভেটো প্রয়োগে পর উদ্ভূত পরিস্থিতিও আলোচনায় প্রাধান্য লাভ করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

সংস্কৃতি-রাজনীতি বিষয়ে আলোচনা হবে উল্লেখ করে পত্রিকার খবরে প্রকাশ করা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান নয়াদিল্লিতে অবস্থানকালে যে আলোচনা হবে, সেখানে রাজনৈতিক বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় মহল সূত্র জানায়, পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজনীতির বিষয়ে বাংলাদেশের ব্যাপারে পাকিস্তানের মনোভাব এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভ প্রভৃতি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

dainik bangla 13এদিকে, ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণের পর যে পথ দিয়ে তিনি গণভবনে যাবেন সেই রুট কিছুটা বদলানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, ঢাকা শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা এক বিবৃতিতে বলেন, বিমানবন্দর থেকে বঙ্গবন্ধু গণভবনের দিকে যাওয়ার পূর্বে যে ঘোষণা করা হয়েছিল, তার পরিবর্তে তিনি বিমান বন্দর থেকে ময়মনসিংহ রোড-শাহবাগ এভিনিউ-এলিফ্যান্ট রোড-ক্রসিং মিরপুর রোড দিয়ে ধানমন্ডির বাসভবনে যাবেন। বিদ্যুৎ নিয়ে তারা বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনা জ্ঞাপনের সময় শৃঙ্খলা বজায় রাখার এবং বিমানবন্দরের ভেতরে না গিয়ে রাস্তার দুই পাশে ও বিমান বন্দরে বাহিরে থাকার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।

শহরে ভুয়া রেশন কার্ড উদ্ধার

রাজধানীতে ভুয়া রেশন কার্ড উদ্ধারের জন্য ঢাকা রেশনিং এলাকায় কারফিউ জারি করবে সরকার। রেশন কার্ড জমা দেওয়ার জন্য সরকার ৭ থেকে ২০ দিন সময় নেবে। প্রয়োজন হলে দেবেন কারফিউ। সরবরাহ মন্ত্রী ফণিভূষণ মজুমদার বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেন যে, রেশন কার্ডের দুর্নীতি রোধ করার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মজুমদার জানান, ঢাকা রেশনিং নগরী থেকে তল্লাশি চালিয়ে এ পর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি ভুয়া রেশন কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে, কিন্তু সংশ্লিষ্টরা মনে করেন যে, নগরীতে আরও বহু ভুয়া রেশন কার্ড রয়েছে। তা না হলে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সত্ত্বেও চাল, গম ইত্যাদি খোলা বাজারে কী করে বিক্রি হয়?