হেফাজতের নেতৃত্ব তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্ব তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। হেফাজতে ইসলামের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি হেফাজতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এগুলো নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না।’

বেলজিয়াম সফর থেকে ফিরে রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়য়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সদ্য প্রয়াত আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুতে তথ্যমন্ত্রী গভীর শোক প্রকাশ করেন।

হাটহাজারী মাদ্রাসায় বিশৃঙ্খলার বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, ‘মাওলানা আহমদ শফীর জন্ম আমার নির্বাচনি এলাকায়, আমার পাশের ইউনিয়নে। তিনি আলেমদের মধ্যে এবং ওই অঞ্চলে কী পরিমাণ জনপ্রিয় ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন, সেটি তার জানাজা  থেকে বোঝা যায়। হাটহাজারী মাদ্রাসার বিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু সেটি যে মাদ্রাসার দীর্ঘদিনের মহাপরিচালকের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করে থাকবে, সেটিই স্বাভাবিক।’

প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিন পেয়েছেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেতাদের কথাবার্তায় মনে হয়, সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে খালেদা জিয়া কারাগারে থাকলেই ভালো হতো।’

‘খালেদা জিয়াকে গৃহে অন্তরীণ রাখা হয়েছে’, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যকে হাস্যকর অভিহিত করে ড. হাছান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে প্রথমে ছয় মাস মুক্তি দিয়েছেন, পরে আরও  ছয় মাস সেটি বর্ধিত করেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের উচিত ছিল এই মহানুভবতার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো, কৃতজ্ঞতা জানানো। কারণ, তিনি শাস্তিপ্রাপ্ত সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তার তো কারাগারের ভেতরেই থাকার কথা ছিল। তিনি আদালত থেকে জামিন পাননি। কিন্তু তার পরিবর্তে তারা যেভাবে কথাবার্তা বলছেন, এতে মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন, এটি না দেখালেই ভালো হতো।’ সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার পরও বিএনপি নেতাদের কথার কারণে জনগণের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে আবারও কারাগারে পাঠানোর দাবি ওঠার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তথ্যমন্ত্রী।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার অনুমোদনক্রমে এবং তার ছেলে তারেক রহমানের পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। এছাড়া জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল। হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই যাদের উন্মেষ, হত্যার রাজনীতিই যারা করে, পেট্রোলবোমা হামলা করে যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যার রাজনীতি করে, তাদের মুখে এসব কথা মানায় না। বরং প্রকৃতপক্ষে হত্যার রাজনীতিই তাদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।’

সিনেমা হল খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সিনেমা হলগুলো খুলে দেওয়ার জন্য সিনেমা হলের মালিক, সিনেমার পরিচালক, প্রযোজকদের পক্ষ থেকে দাবি আছে। তাদের সঙ্গে এ মাসের শুরুতে আমি বসেছিলাম। এ মাসের ১৫ তারিখের পরে বৈঠক করে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। খুব সহসাই তাদের সঙ্গে বসে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।’

মন্ত্রিপরিষদে রদবদলের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি ছাড়া অন্য কেউ এ নিয়ে বলার ক্ষমতা রাখেন না।’