এদিকে আজ ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব নদী দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশও নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। নদী সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রবিবার পালন করা হয় বিশ্ব নদী দিবস। দেশেও নানা আয়োজনে পালিত হবে দিবসটি। দিবসটির এবারের মূল প্রতিপাদ্য ‘রিভারস আর দ্য আর্টারি অব আওয়ার প্ল্যানেট, দে আর লাইফলাইন অন দ্য ট্রুয়েস্ট সেন্স’।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন সূত্র জানায়, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের (স্পারসো) সহযোগিতায় রিমোট সেন্সিং টেকনোলজি ব্যবহার করে সিএস খতিয়ানের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সব নদীর রিয়েল টাইম তথ্য সংগ্রহ এবং টাইম সিরিজ ডাটা বিশ্লেষণ এবং যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে হাইড্রো মরফোলজিক্যাল সমীক্ষা এবং থিমেটিক মানচিত্র তৈরি করা হবে।
কমিশন সূত্র বলছে, ই-তথ্য ভাণ্ডারে প্রথমেই আসবে বুড়িগঙ্গা নদী। এরপর একে একে অন্য নদীগুলো নিয়ে জরিপ করে তথ্য সংগ্রহ করবে কমিশন। এজন্য ইতোমধ্যে একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ৪৮টি নদীর জরিপ করে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। ব্যয় ধরা হয়েছ ৩০ কোটি টাকা।
এই ম্যাপে থাকবে লেয়ারভিত্তিক ব্রিজ, কালভার্ট, পানি অবকাঠামো, ক্রস বাধ ইত্যাদির অবস্থানের বিস্তারিত তথ্য। আরও থাকবে না বালুমহাল, জল মহালের অবস্থানের তথ্য। থাকবে আশপাশের বনাঞ্চল, কৃষি, মৎস্য, শিল্প-কারখানা, নৌ চলাচলসহ নানা বিষয়। ম্যাপ থেকে জানা যাবে নদীর পানির লেভেল, প্রবাহ স্টেশন, ফ্লাড জোনিং, সয়েল অ্যাসোসিয়েশন ইত্যাদিও।
কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা কাজ শুরু করছি। দেশের সব নদীর তথ্য আমরা তথ্য ভাণ্ডারে রাখতে চাই। এই পুরো কাজ অনক সময় সাপেক্ষ। তাই আমরা প্রাথমিকভাবে ৪৮টি নদীকে বেছে নিয়েছি। স্পারসোর অধীনে একটা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। স্পারসো ইতোমধ্যে বুড়িগঙ্গার কাজ শেষ করেছে।
আগামী দুই এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা পুরো প্রতিবেদন হাতে পাবো বলে আশা করছি। তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিক উদ্যোগ নিয়েছি। ধীরে ধীরে সব নদীর তথ্য আমরা এক জায়গায় করতে পারবো বলে আশা করছি।
কমিশনের সদস্য মো. আলাউদ্দিন জানান, নদী দিবস নিয়ে রবিবার সকালে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে জেলা প্রশাসকরা, নদী আন্দোলনকারীরাসহ আরও অনেকে অংশ নেবেন।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে সরকারিভাবে নদী কমিশন শুধু একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। তবে বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সংস্থা ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এরমধ্যে নদী দিবস উদযাপন পরিষদ নানা কর্মসূচিতে দিবসটি উদযাপন করবে। তারা এবারের দিবসটির স্লোগান নির্ধারণ করেছে ‘ভাইরাসমুক্ত বিশ্বের জন্য চাই দূষণমুক্ত নদী’।
তবে জোট বেঁধে কর্মসূচি পালন করছে ১২টি সংগঠন। তারা হচ্ছে বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা নদী গবেষণাগার, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল, রিভার বাংলা, দ্য ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব এপেক্স ক্লাবস বাংলাদেশ, হালদা নদী রক্ষা কমিটি, জিবিএম বেসিন বেইজ্ড পিপলস নেটওয়ার্ক, ব্রহ্মপুত্র সুরক্ষা আন্দোলন, ক্লিন রিভার বাংলাদেশ এবং পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি।
এবার বিশ্ব নদী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ‘রিভারস আর দ্য আর্টারি অব আওয়ার প্ল্যানেট, দে আর লাইফলাইন অন দ্য ট্রুয়েস্ট সেন্স’। এর সঙ্গে মিলিয়েই পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো প্রতিপাদ্য ঠিক করেছে ‘দূষণমুক্ত নদী, সুস্থ জীবন’।
আরও পড়ুন:
নদীকে ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় প্রকাশ