৩২ বছর ধরে ঝুলে থাকা এক হত্যা মামলা তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ

সুপ্রিম কোর্ট৩২ বছর ধরে ঝুলে থাকা সীমা হত্যা মামলার বিচারিক আদালতের কার্যক্রম আগামী তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলার যে সাক্ষীর জন্য (মেডিক্যাল কর্মকর্তা) মামলাটি আটকে আছে তাকে হাজির করা না গেলেও মামলার অন্যান্য ডকুমেন্ট বিবেচনায় নিয়ে এ মামলা নিষ্পত্তি করতে বলেছেন আদালত।

জাতীয় দৈনিকে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বুধবার (৭ অক্টোবর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জামিউল হক ফয়সাল।

পরে আইনজীবী ইশরাত হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ মামলায় একজন সাক্ষী না আসায় ৩২ বছর ধরে মামলাটি ঝুলে আছে। এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি আমরা আদালতের নজরে আনি। আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেন। তিন মাসের মধ্যে মামলাটি বিচারিক আদালতকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি না করলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।’

এর আগে আজ বুধবার (৭ অক্টোবর) দৈনিক যুগান্তরে ‘৩২ বছর ধরে ঝুলে আছে সীমা হত্যার বিচার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরোন ঢাকার জগন্নাথ সাহা রোডে ১৯৮৮ সালের ২৬ এপ্রিল খুন হন সীমা মোহাম্মদী (২০)। বাড়িতে ঢুকে ছুরিকাঘাত করে সীমাকে হত্যার অভিযোগ ওঠে মোহাম্মদ আহমদ ওরফে আমিন নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এরপরই ওই যুবকের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন সীমার মা ইজহার মোহাম্মদী। মামলার তদন্তে উঠে আসে সীমাকে বিয়ে করতে না পেরে সে তাকে হত্যা করে। আসামি পলাতক থাকায় ১৯৯৯ সালের ২২ জুন তাকে হাজিরের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়।

এরপর ২০০১ সালে ২৯ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের পরও সাক্ষ্য দিতে তদন্তকারি পুলিশ কর্মকর্তা ও ময়নাতদন্তকারি চিকিৎসকের অনীহার কারণে মামলার বিচার কাজ বার বার পিছিয়ে যায়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের তৎকালীন প্রভাষক আনোয়ার হোসেন সাক্ষ্য দিতে আজ পর্যন্ত আদালতে হাজির হননি। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও তিনি আসেননি।

মামলাটি বর্তমানে ঢাকার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য এ পর্যন্ত ১১২ বার তারিখ পড়েছে। আদালতের ১১ জন বিচারক বদল হয়েছেন।