(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ওই বছরের ৩১ অক্টোবরের ঘটনা।)১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর খসড়া সংবিধানের ধারা ওয়ারি আলোচনায় মোট ১৬ টি অনুচ্ছেদ গৃহীত হয়েছে। এই ১৬টি অনুচ্ছেদের মধ্যে মোট ৯টি সংশোধনী প্রস্তাব গৃহীত হয়। সংবিধানের ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদে একটি সংশোধনী প্রস্তাব যথার্থ হয়নি বলে স্পিকার নাকচ করে দেন। কয়েকটি সংশোধনী কণ্ঠভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়। এই ১৬টি অনুচ্ছেদ গ্রহণের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশ একটি রাষ্ট্রীয় সীমানা, তার ভাষা,তার জাতীয় সংগীতের বিষয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠিত করে।
সংবিধান গণপরিষদে যথারীতি গৃহীত হওয়ার পর আগামী ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখ থেকে কার্যকর হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ৩১ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্রে এ তথ্য জানা যায় বলে ইত্তেফাকের ১ নভেম্বরের পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। উল্লেখ্য যে, সংবিধান কার্যকরী হওয়ার দিনটি গত বছরের একই দিনে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণের মাধ্যমে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের পরিসমাপ্তি ও চূড়ান্ত বিজয় দিবসের সঙ্গে মিলে গেছে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস ঘোষণা করেছে সরকার। সেদিন সারাদেশে বিপুল উৎসাহ নিয়ে দিবসটি পালিত হবে।
পাকিস্তান পুনরায় ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে বলে পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে আসতে থাকে। এনাকে উদ্ধৃত করে ইত্তেফাকে প্রকাশিত সংবাদ বলছে, লন্ডনে প্রাপ্ত সংবাদে প্রকাশ করাচিতে ইমারতের ওপর বিমানবিধ্বংসী কামান স্থাপন করা হয়েছে এবং শহরে গাড়ির আলো নিস্প্রভ করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সামরিক পাহারা মোতায়েন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সেন্ট লুই পোস্টের প্রতিনিধিকে জানান যে, ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা পাকিস্তানের সবসময়ই রয়েছে এবং এই সংবাদ পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ প্রস্তুতি সংবাদও প্রকাশিত হয়ে যায়।
চোরাচালান ও মজুতদারি ঠেকাতে রেশন ব্যবস্থা, ন্যায্যমূল্যের দোকানসহ নানা উদ্যোগ নিলেও কোনোটিই কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছিল না। ঢাকায় টানা অভিযানের পর ৩১ অক্টোবর মৌলভীবাজারে অভিযান চালিয়ে ১০ লাখ টাকার ভেজাল ও চোরাই মাল উদ্ধার করা হয়। পুলিশ মৌলভীবাজারে আকস্মিক অভিযানে প্রায় ৬ ঘন্টা তল্লাশি চালিয়ে ১০ লাখ টাকার মজুত ভেজাল ও চোরাই মালামাল উদ্ধার করে। তল্লাশিকালে ১১ ব্যক্তিকে মজুতকরণ, ভেজাল মিশ্রণ ও কালোবাজারি ও চোরাচালানের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। মৌলভীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় বিপুল পরিমাণ মজুত ভেজাল ও চোরাই মালামাল রয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় দীর্ঘদিন যাবৎ অভিযোগ করা হচ্ছিল। এক প্রকার অসাধু ব্যবসায়ী দুর্নীতিপরায়ন প্রশাসকের সহযোগিতায় এই ঐতিহ্যবাহী বিপনন কেন্দ্রগুলোকে মজুতখানা বানিয়ে কালোবাজারি ও চোরা কারবারের আখড়ায় পরিণত করেছে বলে বিভিন্ন মহল অভিযোগ করেন।