সরকারিভাবে কিছু জানে না বাংলাদেশ

দৈনিক বাংলা

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ওই বছরের ২২ নভেম্বরের ঘটনা।)

পাকিস্তান আটক ১০ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিলেও বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে কিছুই জানে না। বাংলাদেশ সরকার গত ২১ নভেম্বর পাকিস্তান থেকে ১০ হাজার বাঙালি মহিলা ও শিশুকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে পাকিস্তানের প্রস্তাব বেসরকারিভাবে জানতে পেরেছে। এর আগে নয়াদিল্লিস্থ রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে পাকিস্তান ভারতকে এ কথা জানায়।

মুজিববর্ষ২আন্তর্জাতিক রেডক্রসের সূত্রে বাংলাদেশ ঘরোয়াভাবে খবরটি পায়। এই খবরে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র দফতর সূত্রে বলা হয়, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে কিছু জানতে পারেননি। তবে সাগ্রহে খবরটি পড়েছেন। এই সূত্রে বলা হয়, তারা ব্যাপারটি বিবেচনা করে দেখছেন। ১৯৭২ সালের ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক রেডক্রস এর প্রধান সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করে। তবে তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু জানা যায়নি।

বাংলাদেশ অবজারভারসার্টিফিকেট বানানো যাবে

বাংলাদেশ সরকার সব সার্টিফিকেট, জাতীয় প্রাইজবন্ড, জাতীয় পুঁজি বিনিয়োগ ট্রাস্টের ইউনিট, আইসিবি মিউচুয়াল ফান্ড সার্টিফিকেট ইত্যাদির মালিকদের সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেয়। এক সরকারি প্রেস রিলিজের উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, এসব সার্টিফিকেট আর ইউনিটের মালিকরা যাতে তাদের নিজ নিজ সার্টিফিকেট ইত্যাদি ভাঙাতে, লেনদেন করতে ও হস্তান্তর করতে পারেন সে জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নির্ধারিত পদ্ধতি ঘোষণা করেছে।

দৈনিক বাংলাঅর্থ দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সার্টিফিকেট বন্ড ইউনিটের মালিকদের নির্ধারিত ফরমে প্রত্যেক ক্যাটাগরির জন্য অর্থাৎ সার্টিফিকেট আর ইউনিটের জন্য পৃথক পৃথকভাবে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়। অর্থ দফতরের ঘোষিত পদ্ধতি সংক্ষেপে পত্রিকাগুলো নিউজ আকারে প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে ইস্যু করা সকল সেভিংস সার্টিফিকেট যেগুলো ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বা তার আগেই নির্ধারিত মেয়াদে পৌঁছেছে বা এখনও ভাঙানো বা লেনদেন করা হয়নি সেগুলো ডাকঘর ও ব্যাংকে স্বাভাবিকভাবে ভাঙানো যাবে।

মুজিববর্ষ৫রাষ্ট্রায়ত্ত কাপড় কলে উৎপাদন ব্যাহত

কাপড়ের কলগুলোর জন্য খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানির ব্যাপারে সুস্পষ্ট নীতির অভাব এবং বাস্তব কর্মপন্থা গ্রহণ এর ব্যর্থতার দরুন কাপড়ের কলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কাপড়ের মূল্য বৃদ্ধির এটি অন্যতম প্রধান কারণ বলেও উল্লেখ করা হয়। খুচরা যন্ত্রাংশের জন্য রাষ্ট্রগুলো শতকরা ২৫ ভাগ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রের জন্য স্বাধীনতার আগের বছরে আনুমানিক দেড় কোটি টাকার মতো খুচরা যন্ত্রাংশ প্রয়োজন হতো বলে জানানো হয়। সরকার প্রথম বাণিজ্যিক মৌসুমের অর্ধেক আমদানির অনুমোদন করে। হানাদার বাহিনী অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো এই খাতেও যথেষ্ট ক্ষতি সাধন করে গেছে। ফলে কাপড়ের কলগুলির খুচরা যন্ত্রাংশের প্রয়োজনীয়তা স্বাভাবিক অবস্থায় চাইতে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ সকল কল সুষ্ঠুভাবে চালু করার জন্য প্রায় তিন কোটি টাকার যন্ত্রাংশ প্রয়োজন। শুধুমাত্র যন্ত্রাংশের অভাবে একটি কাপড়ের কল বন্ধ রয়েছে।

গর্ভপাত বৈধ করার সুপারিশ

বাংলাদেশ জাতীয় পরিবার পরিকল্পনা সেমিনারের আলোচনায় অংশগ্রহণকারীগণ দেশের সকল স্থানে কার্যকর জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য গর্ভপাত বৈধকরণের সুপারিশ করে। জাতীয় সেমিনারে তৃতীয় অধিবেশন এ কথা বলা হয়। তারা মনে করেন জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সফল করার জন্য গর্ভপাত বৈধ করা উচিত কারণ জন্মনিয়ন্ত্রণে গর্ভপাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেমিনারে কলকাতার হিউম্যানিটি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ডা. মল্লিক গর্ভপাত আইন সংগত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন ও গর্ভপাতের বিভিন্ন পন্থা সম্পর্কেও তিনি আলোচনা করেন।