শ্রমনীতি পর্যালোচনায় বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ
সংবিধান বিধির আলোকে শ্রমনীতি পর্যালোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্দেশ দেন। বিভিন্ন শ্রমিক সংস্থার সঙ্গে পরামর্শক্রমে তা পর্যালোচনা করা হবে বলে একটি সরকারি হ্যান্ডআউটে বলা হয়। এখানে উল্লেখ, প্রধানমন্ত্রী গত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে একটি সম্মেলন আহ্বান করেন। ওই সম্মেলনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, শ্রমিক সংস্থাগুলোর মতামত বিবেচনার পর একটি শ্রমনীতি প্রণয়ন করা হবে। সেই মতে বিভিন্ন সংস্থার মতামত বিবেচনার পর শ্রমনীতি প্রণয়নও করা হয়। ইতোমধ্যে গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়েছে এবং ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে তা কার্যকর হবে বিধায় সংবিধান আলোচনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
সাধারণ পরিষদের আলোচনা বিলম্বিত
বাংলাদেশের জাতিসংঘে অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে ১৯৭২ সালের ২৯ নভেম্বর বিকালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের যে বিতর্ক শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অনুরোধে একদিনের জন্য তা স্থগিত রাখা হয়। বাংলাদেশ জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকের মর্যাদা ভোগ করছে। সাধারণ পরিষদের সভাপতির বিবৃতি প্রণয়ন সম্পর্কে ঢাকার সঙ্গে পরামর্শের জন্য বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা এস এ করিম এই আবেদন করেন।
আটক বাঙালিদের মুক্তির জন্য সচেষ্ট হতে আহ্বান
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙালিদের স্বদেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে পাকিস্তানকে বুঝিয়ে রাজি করানোর জন্য সমাজের প্রতি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান। ১৯৭২ সালের ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় ভারতীয় পার্লামেন্টের এক যুক্ত অধিবেশনে তিনি আটকে পড়া বাঙালিদের নির্যাতনের জালে বন্দি বলে আখ্যায়িত করেন। রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে বলেন, তাদের ওপর নির্যাতন চালানো এবং রাজনৈতিক দরকষাকষির জন্য জিম্মি হিসেবে আটকে রাখা মানবাধিকার সনদ পদদলিত করার শামিল।
বাংলাদেশ সোভিয়েত পণ্য বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরিত
বাংলাদেশ-সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বিতীয় পণ্য বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর হয় ১৯৭২ সালের ২৯ নভেম্বর। বাসসের এক খবরে জানা যায়, স্টেট গেস্ট হাউসে স্বাক্ষরিত চুক্তি গত মার্চ মাসে বাংলাদেশে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি অনুসারে সম্পাদিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সফররত বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের নেতা ও বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য ও কৃষি সচিব চুক্তি স্বাক্ষর করে। দলিলের অধীনে বাংলাদেশ সোভিয়েত ইউনিয়নে কাঁচা পাট, থলে, চা, ছাগলের চামড়া, মশলা, তোয়ালে, চাদর রফতানি করবে। বিনিময়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে কেরোসিন, সীসার পিণ্ড, তুলা, যন্ত্রপাতি, সাজসরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ আমদানি করবে বাংলাদেশ।
মাছ-ভাত বজায় রাখা দায়
ঢাকা শহরে মাছের তীব্র সংকট দেখা গিয়েছিল। সঙ্কট কত তীব্র তা শহরের মাছের বাজারগুলোতে না গেলে উপলব্ধি করা যায় না। বাজারে সামান্য পরিমাণে যে মাছ আমদানি হয় তা নিয়ে প্রচণ্ড রকমের কাড়াকাড়ি প্রতিযোগিতা শুরু হয় ক্রেতাদের মধ্যে। দামাদামির সুযোগ খুবই কম। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অপ্রতুল হওয়ার কারণে দোকানী যে দাম হাঁকে ক্রেতা সেইদামেই নিয়ে যায় বলে খবরে বলা হয়। এই সঙ্কট কেবল রাজধানী ঢাকা শহরের সীমাবদ্ধ নয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাওয়া খবরে জানা যায় যে, সর্বত্র এই সঙ্কট বিরাজ করছে।