কমিশন সূত্র বলছে, এই জঞ্জাল দীর্ঘদিনের। কোনও নদীতে চর জাগলে সেখানের নদী খেকোরা নদী দখল করেছে। এভাবে সেখানে স্থায়ী বসতি এবং ইমারত নির্মাণ করা হয়েছে। খনন করে এসব নদীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও কখনও করা হয়নি। এতে করে মূল নদীর অনেক শাখা প্রশাখা মরে গেছে। সরকার বা কোনও সরকারি সংস্থার কাছে এর কোনও হিসাবও নেই। তবে নদী কমিশন গঠিত হওয়ার পর থেকেই প্রধান ৪৮টি নদী নিয়ে কাজ শুরু হয়। চার বছর ব্যাপী একটি প্রকল্প আগামী বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৪৮ নদী নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখা গেছে, এখানের অনেক শাখা নদীই এখন মরে গেছে। সেসব নদী উদ্ধার করা প্রায় দুরূহ। নদীর জমি কোনও ব্যক্তির নামে রেকর্ড হওয়ার বিধান নেই। কিন্তু নানাভাবে অনেক নদীর জমিই ব্যক্তির দখলে চলে গেছে। সঠিকভাবে সীমানা চিহ্নিত করে এসব জমি আবার নদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
এছাড়া জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জের ৯টি আর্ন্তজাতিক নদীর পানির প্রবাহ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমেছে। এতে করে সোমশ্বেরী, জাদুকাটা-রক্তি, জালুখালী, নয়াগাঙ, জিনজিরাম, চিতলখালী, ভোগাই-কংস, নিতাই ও উমিয়ামের এখন মরার দশা। আন্তর্জাতিকভাবে নদীর পানির সঠিক হিস্যা না মেলায় এই অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এই এলাকা দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্রের ওপর চীন বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। একবার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ভারত এবং বাংলাদেশে নদীর জীবন শঙ্কায় পড়বে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বহু দিনের চেষ্টার পরও ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে তিস্তায় ভারত নিজের ইচ্ছামতো পানি ছাড়ে। কৃষি সেচ মৌসুমে পানির প্রবাহ না থাকায় উত্তরের জনপদের বিভিন্ন জায়গায় হাজার হাজার একর জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। এভাবে চলতে থাকলে নদীটির জীবন বিপন্ন হবে। এতে করে আশেপাশের এলাকার পানির স্তর আরও নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে গোটা উত্তরাঞ্চলে মরুময়তা ছড়িয়ে পড়ছে। ভারত এক তরফাভাবে নদীটির ওপর বাঁধ নির্মাণ করায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। শুধু এসব নদীই নয়, দেশের বেশিরভাগ নদীই রয়েছে সংকটাপন্ন শঙ্কায়।