গত বছ‌র কর্মস্থলে ৭২৯ শ্রমিকের মৃত্যু

সদ্য শেষ হওয়া বছরে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ৭২৯ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ৩৪৮ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে পরিবহন খাতে। শনিবার (৯ জানুয়ারি)  জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। 

বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ‘বাংলাদেশের শ্রম ও কর্মক্ষেত্র পরিস্থিতি বিষয়ে সংবাদপত্র ভিত্তিক বিলস্ জরিপ-২০২০’  শীর্ষক এই জরিপ প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানায় বিলস। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে কর্মস্থলে শ্রমিকদের মৃত্যু কমেছে বলেও জানায় সংস্থাটি।

সংবাদ সম্মেলনে বিলস জানায়, গতবছর কর্মক্ষেত্রে নিহতদের মধ্যে ৭২৩ জন পুরুষ ও ছয় জন নারী শ্রমিক। সবচেয়ে বেশি ৩৪৮ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে পরিবহন খাতে। আর মৃত্যুর দিক থেকে নির্মাণ খাত দ্বিতীয় ও কৃষি খাতের অবস্থান তৃতীয়। ৮৪ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় নির্মাণ খাতে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬৭ জনের মৃত্যু হয় কৃষি খাতে।

এছাড়া দিনমজুর ৪৯ জন, বিদ্যুৎ খাতে ৩৫ জন, মৎস্য খাতে ২৭ জন, স্টিল মিল শ্রমিক ১৫ জন, নৌ পরিবহন শ্রমিক ১৫ জন, মেকানিক ১৪ জন, অভিবাসী শ্রমিক ১৫ এবং অন্যান্য খাতগুলোতে (ইট ভাটা, হকার, চাতাল, জাহাজ ভাঙা) ৬০ জন শ্রমিক মারা গেছেন।

এর আগে, ২০১৯ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১২০০ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল, এর মধ্যে পুরুষ ১১৯৩ জন ও সাত জন নারী শ্রমিক। খাত অনুযায়ী ওই বছর সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটে পরিবহন খাতে ৫১৬ জন।  দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নিহতের ঘটনা ঘটে নির্মাণ খাতে ১৩৪ জন। তৃতীয় সর্বোচ্চ নিহতের ঘটনা ঘটে কৃষি খাতে ১১৬ জন।

অন্যদিকে, ২০২০ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৪৩৩ জন শ্রমিক আহত হন, এর মধ্যে ৩৮৭ জন পুরুষ এবং ৪৬ জন নারী শ্রমিক। মৎস্য খাতে সর্বোচ্চ ৬৮ জন শ্রমিক আহত হন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নির্মাণ খাতে ৪৯ জন শ্রমিক আহত হন। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে ৪৮, পরিবহন খাতে ৪৭, জুতা কারখানায় ২০ জন, নৌ পরিবহন খাতে ১৬ জন, তৈরি পোশাক শিল্পে ৩৭, জাহাজ ভাঙা শিল্পে ২৯, দিনমজুর ১৬, উৎপাদন শিল্পে ১৯ ও কৃষিতে ১০ জন শ্রমিক আহত হন। এর আগে ২০১৯ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৬৯৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিলসের ভাইস চেয়ারম্যান শিরিন আখতার এমপি, আনোয়ার হোসাইন, আমিরুল হক আমিন, উপদেষ্টা নাইমুল আহসান জুয়েলসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।