বিএনপির অভিযোগ ‘নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা’: তথ্যমন্ত্রী

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অভিযোগ ‘নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা’র মতো বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘প্রথম দফা নির্বাচনে বিএনপি মাত্র দু’টি পৌরসভায় জয় পাওয়ায় লজ্জা ঢাকার জন্য প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে এ কথা বলা ছাড়া তাদের কোনও বক্তব্য নেই। তাই নির্বাচন নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলছে।’

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের আলোচনা ও ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রকিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং সামনের ধাপগুলোও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপিকে তাই অনুরোধ জানাবো, পৌরসভা ও জেলা-উপজেলায় নিজেদের যে অনৈক্য, তা নিরসন করুন। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা না করে সর্বশক্তি নিয়োগ করে নির্বাচন করুন। নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ করাটা—যখন কেউ নাচতে না জানে তখন বলে যে উঠান বাঁকা।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ যথাসময়ে করোনার টিকা পাচ্ছে না বলে গুজব রটানোর চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর আবার করোনা ভ্যাকসিন অ্যাপের খরচ নিয়ে কিছু গণমাধ্যমে ভুল সংবাদ পরিবেশন হয়েছে। আইসিটি বিভাগ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি দিয়ে পরিষ্কার বলা হয়েছে, অ্যাপসের জন্য কোনও খরচ নেই। আবার ভারত থেকে নাকি ৪৭% বেশি দামে আমরা ভ্যাকসিন কিনছি। এ রিপোর্টও সত্য নয়, এটিও মিথ্যা। চুক্তি অনুযায়ী ভারত যে দামে ভ্যাকসিন পাবে, আমরাও একই দামে ভ্যাকসিন পাবো। দায়িত্বশীল কোনও গণমাধ্যম যদি ভুল বা অসত্য সংবাদ পরিবেশন করে, তাহলে তাদের দায়িত্বশীলতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা খর্ব হয়। তাই আমি সব গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ জানাবো, ভালোভাবে খোঁজ-খবর না নিয়ে এ ধরনের কোনও সংবাদ যেন পরিবেশিত না হয়।’

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ওপর আলোকপাত করে ড. হাছান বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম। কিন্তু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়নি। বঙ্গবন্ধু যদি ফিরে আসতে না পারতেন, তাহলে আমাদের স্বাধীনতা কতটুকু টেকসই হতো, সেটি নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন থেকে যায়। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনেই আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সংহত হয়।’

শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের পৃথিবীতে মেধা, মমতা, মূল্যবোধ, দেশাত্মবোধ এবং যুক্তিনির্ভরতা— এই পাঁচটি বিষয়ের সমন্বয় ঘটিয়ে নতুন প্রজন্ম তৈরি করতে পারলেই আমরা দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারবো এবং সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ টেকসই হবে। আর স্বপ্নটা শুধু নিজের জন্য নয়, সমাজ ও দেশের জন্যও দেখতে হবে।’

শিশু-কিশোর সংগঠক ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেন, কে এম শহিদ উল্যা, আসাদুল হক প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সভা শেষে বিভিন্ন জেলার শিশু-কিশোর সংগঠকদের হাতে ১২টি ল্যাপটপ তুলে দেন ড. হাছান মাহমুদ ও জুনাইদ আহমেদ পলক।