সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ: সহকারী কর কমিশনার বরখাস্ত

শেষ পর্যন্ত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চাকরি হারালেন এনবিআরের সহকারী কর কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ খুলনা কর অঞ্চলের সহকারী কর কমিশনার ছিলেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ সরকারের ৩ কোটি ৫০ লাখ ২৬ হাজার ৯২৯ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ কারণে তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা মোতাবেক চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলো।

এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি তাকে বরখাস্ত করার প্রস্তাব রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করেছেন। তার আগে মেজবাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে শাস্তি প্রদানের বিষয়ে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হলে কমিশন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তকরণ দণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে।

প্রসঙ্গত, সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৯ সালের ১৯ মে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর কিছু দিন পর ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪২৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

প্রসঙ্গত, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

খুলনা কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার (সদর প্রশাসন) খোন্দকার তারিফ উদ্দীন আহমেদ বাদী হয়ে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে (খালিশপুর) সহকারী কর কমিশনার মেজবাহর বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেজবাহ ২০১৭ সালের ৮ মে থেকে ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর পর্যন্ত খুলনা কর অঞ্চলের অধীনস্থ কর সার্কেল-১৪, বাগেরহাটে সহকারী কর কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এ সময় তিনি করদাতাদের রাজস্ব হিসাবে দাখিল করা মোট ৪০টি পে-অর্ডার, ডিডি, ক্রস চেক সরকারি কোষাগারের পরিচালিত হিসাবে চালানের মাধ্যমে জমা না দিয়ে বাগেরহাট সোনালী ব্যাংক শাখায় জমা দেন। পরবর্তীতে তিনি সেই অ্যাকাউন্ট থেকে নিজে সই করে দুই কোটি ১০ লাখ ২৪ হাজার ৪২৩ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, একাধিক চেকের মাধ্যমে বাগেরহাট অপর একটি ব্যাংক থেকে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা, সার্কেল-১৭ মোংলায় কর্মরত থাকা অবস্থায় সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক থেকে ২৯ লাখ ৯০ হাজার ৯৯৭ টাকা, জনতা ব্যাংক থেকে ২৯ লাখ ৯৯৮ টাকা, সার্কেল-১০ মাগুরায় কর্মরত থাকা অবস্থায় সোনালী ব্যাংক থেকে ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৪৮৪ টাকা, সার্কেল-২২ ভেড়ামারায় কর্মরত থাকা অবস্থায় জনতা ব্যাংক থেকে ৪২ লাখ, সাত হাজার ৫২৭ টাকাসহ সর্বমোট তিন কোটি ৪৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪২৯ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।