বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাঁচ প্রার্থী কারা?

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ঘটনা।)

১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদের আসন্ন নির্বাচনে বিভিন্ন দল থেকে এই দিন পর্যন্ত পাওয়া মনোনয়নের তালিকায় জাতির জনক প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মোকাবিলা করতে বিরোধী দলগুলোর প্রার্থী কারা হলো তা জানা যায়। দুটি দল তাদের মনোনীত প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে। দলগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (মোজাফফর) ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল। তবে ন্যাপ মাত্র একটি নির্বাচনি এলাকায় এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল সবকটি এলাকা থেকে জাতির জনকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। বিভিন্ন দল থেকে পাওয়া সর্বশেষ তালিকায় দেখা যায়, জাসদ ঢাকা-১২ নির্বাচনি এলাকা থেকে এম এ আউয়ালকে দাঁড় করায়। অপরদিকে ঢাকা-১৫ নির্বাচনি এলাকা থেকে দাঁড়ান মেজর এমএ জলিল।

ঢাকার বাইরে ফরিদপুর ১১-এর প্রার্থী মাওলানা শামসুল হুদা এবং বাকেরগঞ্জ-৪ আসন থেকে আজহার উদ্দিন আহমেদ দাঁড়িয়েছেন। মোজাফফর ন্যাপ ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থী দাঁড় করায়নি। বাকেরগঞ্জ-৪ থেকে অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমানকে দাঁড় করিয়েছে।

শহরে নৌকা মিছিল

তেজগাঁও-গুলশান এলাকার বিভিন্ন আওয়ামী লীগ ইউনিট এবং জাতীয় শ্রমিক লীগভুক্ত বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিট যৌথভাবে এই দিনে শহরে একটি নৌকার মিছিল বের করে। নানা বর্ণে সজ্জিত বিভিন্ন আকারের নৌকা ১৭টি ট্রাকে বহন করে উক্ত মিছিল শহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমণ করে। ‘তোমার আমার মার্কা নৌকা নৌকা’ স্লোগানে মুখর মিছিলটি শেখ ফজলুল হক মনিকে হত্যার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররমের প্রতিবাদ সভায় যোগ দেয়। পরে সেখান থেকে গণভবনে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মিছিলকারীরা। তাদের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুকে একটি রুপার নৌকা উপহার দেন হেদায়েতুল ইসলাম। এ সময় আসন্ন নির্বাচনে তেজগাঁও-গুলশান এলাকা থেকে প্রার্থী হওয়ায় বঙ্গবন্ধুকে অভিনন্দনও জানানো হয়।

বঙ্গবন্ধুর পক্ষে যারা মনোনয়ন পেশ করবেন

ঢাকা মহানগরীর দুটি আসনের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে আগামীকাল ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী গোলাম মোস্তফা, সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, হেদায়েতুল ইসলাম, মিসির আলী ও সাধারণ সম্পাদক মো. সুলতান মনোনয়নপত্র পেশ করবেন।

৬ হাজার স্কুল সরকারি নিয়ন্ত্রণে

চলতি আর্থিক বছরে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন করা হবে বলে পত্রিকার খবরে জানানো হয়। এ বাবদ প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা খরচ হবে বলে সূত্র জানায়। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিতে ইতোপূর্বে প্রাথমিক শিক্ষক প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছিল। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক ভাষণে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

দোকানে সয়াবিন তেল ছিল না

১৯৭৩ সালের এই সময়ে শহরের অধিকাংশ রেশন দোকানে কার্ডধারীদের সয়াবিন তেল দেওয়া যায়নি। দোকানিরা জানান, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তেলের কোটা পাননি তারা। এনা’র খবরে জানা যায়, রেশন দোকানে এক সপ্তাহ যাবৎ জোগান না থাকায় খোলাবাজারে সয়াবিন তেলের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। প্রতি সের সাত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য যে, সরিষার তেলের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় জনসাধারণ ভোজ্যতেল হিসেবে ব্যাপকভাবে সয়াবিন তেল ব্যবহার করছেন। রেশন দোকানে যুক্তিসঙ্গত মূল্যে এই তেল সরবরাহ করা হয়। গত সপ্তাহে রেশনের চাল সরবরাহও বিঘ্নিত হয়েছিল।