ভ্যাকসিন নিয়ে ১৫ দিন পর পর বৈঠক  

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন নিয়ে প্রতি ১৫ দিনে একবার বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বৈঠকে ভ্যাকসিনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।

বুধবার (০৩ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডিপ্লয়মেন্ট ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী জানান, আগামী জুলাই পর্যন্ত সরকার চার কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে অর্ডার আছে এবং কোভ্যাক্স যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা সেসব যদি ঠিকমতো পাই, তাহলে জুলাই নাগাদ চার কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আমাদের হাতে থাকবে। এই চার কোটি ডোজ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাসে আসবে। এর মধ্যে যদি কোনও পরিবর্তন লাগে সেটা করবো। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ১৫ দিনের মধ্যে একদিন ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা করবো। সেরাম থেকে ভ্যাকসিন আনার পাশাপাশি অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিন যদি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পায় সেগুলো নিয়েও আলোচনা করবো।’করোনার ভ্যাকসিন

তিনি বলেন, ‘আমরা ভ্যাকসিন গ্রহণের বয়সসীমা ৪০ বছর নির্ধারণ করেছি। যদিও ভারতে ৬০ বা তার বেশি বয়সী লোকদের ভ্যাকসিন দিচ্ছে এখন। আমাদের কাছে প্রস্তাব এসেছে বয়সসীমা কমিয়ে আনার। আমরা সেটা নিয়েও পরিকল্পনা করছি। তবে আমাদের যে বয়সসীমা দেওয়া তাতে চার কোটি লোককে ভ্যাকসিন দিতে হবে। যদি বেশি ভ্যাকসিন আসে তাহলে বয়সের বিষয় চিন্তা করতে পারবো। আমাদের টার্গেট দ্বিতীয় ডোজ যেন হাতে থাকে। সেটা চিন্তা করেই কাজ করছি।’

মন্ত্রী জানান, বিভিন্ন সংস্থা ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৩৫০ কোটি ডলার দিতে চায়। আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থটা বিবেচনা করবো।

বেসরকারি পর্যায়ে ভ্যাকসিন আনা হলে সেটা কীভাবে প্রদান হবে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার যদি অনুমোদন দেয় সেক্ষেত্রে কোন কোন কোম্পানি ভ্যাকসিন আনতে পারে সেটা দেখা হবে। সেটা তারা নিজ অর্থে ক্রয় করবে। আর সেই ভ্যাকসিন যারা গ্রহণ করবেন তাদেরও নিজ অর্থ কিনে নিতে হবে। এখানে সরকারের কোনও হাত নেই। তবে যে ভ্যাকসিনই আসুক সেটা ডব্লিউএইচও এবং আমাদের ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদন গাইডলাইন মেনে আনতে হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে প্রধানমন্ত্রী, সাংবাদিকসহ দেশবাসী সবাই সন্তুষ্ট। আমার এখন পর্যন্ত ৩৩ লাখের বেশি লোককে ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হয়েছি। তাছাড়া ভ্যাকসিন নিতে রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৪৫ লাখের বেশি। যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারা প্রত্যেকে সুস্থ আছেন। কোনও জায়গায় কোনও অঘটন ঘটেনি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের স্কুল কলেজ খুলে দেওয়া হচ্ছে। তাই শিক্ষক-কর্মচারী, কিছু সংখ্যক ছাত্র যাদের হল খুলে দেওয়া হবে তাদেরও ভ্যাকসিন দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিদেরও ভ্যাকসিন দিতে হবে। সেক্ষেত্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে তালিকা দিলে সে অনুযায়ী ভ্যাকসিন দেবো। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত বিদেশি যারা রয়েছে ওই মন্ত্রণালয় তালিকা দিলে তাদেরও ভ্যাকসিন দিতে হবে। একই সঙ্গে পাঁচতারকা হোটেলে কর্মরতদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। এছাড়া সব পোর্টে কর্মরতদের ভ্যাকসিন দিচ্ছি। আগামী জুন-জুলাই পর্যন্ত কর্মসূচি নিয়ে আজ আলোচনা হয়েছে।’