উপমহাদেশের সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের গঠনমূলক মনোভাব জানালেন বঙ্গবন্ধু

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ২৭ মার্চের ঘটনা।)

১৯৭৩ সালের এই দিনে এক বৈঠকে যুগোস্লাভিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিজেডিককে দেশের অমীমাংসিত সমস্যাগুলো সম্পর্কে বাংলাদেশের মনোভাব বিষয়ে অবহিত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ গোড়া থেকেই বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে গঠনমূলক মনোভাব গ্রহণ করেছে। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে, বিশেষ করে বিভিন্ন দেশের মুক্তি সংগ্রাম সম্পর্কে মতবিনিময় করেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক উত্তেজনা প্রশমনের অগ্রগতিতে উভয় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। সরকারি মুখপাত্র জানান, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যাপারে উভয় দেশের মধ্যে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের আরও আলোচনা হবে।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের দুই প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা এই প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনায় মিলিত হয়েছেন।

image1কয়েকটি চুক্তি

এদিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সচিবালয়, বাংলাদেশ সরকার এবং দুটি যুগোস্লাভ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চালনা বন্দরের ৮টি জেটি নির্মাণের জন্য ৪২ কোটি টাকার চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এনা এই খবর পরিবেশন করে। এ ছাড়া বাসসের খবরে বলা হয়, দু'দেশের মধ্যে কারিগরি সহযোগিতা সম্পর্কিত একটি চুক্তিও স্বাক্ষর হয়। এই সহযোগিতা চুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য হলো, দু'দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করা এবং কারিগরি সহযোগিতা গড়ে তোলা।

পুনর্গঠনের সংগ্রামে জয়যুক্ত হতে হবে

রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতা-উত্তরকালে দেশ পাহাড়সম সমস্যা মোকাবিলা করছে। তা সমাধানের জন্য সরকার বদ্ধপরিকর। এইদিন জাতীয় দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, শহীদদের কথা স্মরণ করে দেশ গড়ার জন্য আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। দেশের নিরাপত্তা ও জনগণের জীবনের নিশ্চয়তা বিধান করে জীবনের সব ক্ষেত্রে অগ্রগতির জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে।

স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালে জনগণের মধ্যে যে ঐক্য দেখেছেন, আজকের এই জাতি পুনর্গঠনের সময়ও বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

image3ছাত্রলীগের ডাকে নকল প্রতিরোধ দিবস

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এম এ রশিদ এক সংবাদ বিবৃতিতে পরীক্ষায় নকল প্রবণতা রুখে দাঁড়াবার জন্য ৩১ মার্চকে নকল প্রতিরোধ দিবস পালনের আহ্বান জানান। কর্মসূচি হিসেবে বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছাত্র শোভাযাত্রা ও প্রচারপত্র বিলি করার কথা জানানো হয়। ছাত্রসমাজের নৈতিকতার পরিবর্তন দেখে তারা ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য এবং রাষ্ট্রপরিচালনায় সুদক্ষ কারিগর হিসেবে যারা গড়ে উঠবে- পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের মাধ্যমে তারা দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

image2বাধা দিলে গুলি

দুষ্কৃতিকারী ও সমাজবিরোধীদের নির্মূল করার অভিযানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে গুলি চালানোর জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মালেক উকিল পুলিশ বাহিনীর প্রতি নির্দেশ দেন। নোয়াখালীর মাইজদী পুলিশ লাইনে পুলিশ ও সরকারি কর্মচারীদের সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

দেশের চোরাচালান, মজুদদারি ও সমাজবিরোধী কার্যক্রম নির্মূল অভিযান শুরুর জন্য তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে ‘গ্রিন সিগনাল’ পেয়েছেন বলেও জানান।