স্বীকৃতির আগে পিন্ডির সঙ্গে আলোচনা নয়

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ৫ এপ্রিলের ঘটনা।)

১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, পাকিস্তান কর্তৃক স্বীকৃতির আগে দেশটির সঙ্গে কোনও পর্যায়ের আলোচনাতেই বসতে রাজি নন। বাস্তবতা মেনে নিতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলাতেই হবে বলে ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু।

১৯৭৩ সালের এপ্রিলে এসেও বাংলাদেশিদের যারা পাকিস্তানে আটকা পড়েছিল তারা ফিরতে পারেনি। তাদের নিয়ে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলি ভুট্টো বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে দেন-দরবারের চেষ্টা করছেন বলে খবরে জানা যায়।

১৯৭৩ সালের এই দিনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন স্পষ্ট করে বলেন, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার আগে পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা হতে পারে না। একমাত্র সার্বভৌমত্বের পারস্পরিক সমতার ভিত্তিতে কথাবার্তা হতে পারে।

ঢাকা সফররত ইন্দিরা গান্ধীর বিশেষ দূত হাকসারের সঙ্গে আলোচনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করে ড. কামাল হোসেন বলেন, উপমহাদেশের সমস্যাগুলো নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের কথাবার্তা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানকে জড়িয়ে যেসব সমস্যা তার কোনও প্যাকেজ ডিল নিয়ে তারা আলোচনা করেননি।

এর চারদিন আগে হাকসার ঢাকা আসেন। ঢাকায় আসার পরদিন তিনি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ও তাঁকে ইন্দিরা গান্ধীর একটি চিঠি দেন। ভারতীয় সংবাদপত্রে হাকসারের এ ঢাকা সফরকে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়। ধারণা করা হয়, উপমহাদেশের উত্তেজনা হ্রাস করার কাজ করছেন তিনি। ওইসব খবরে আরও বলা হয়, চিঠিতে নাকি যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা প্রস্তুত করা, গৃহবন্দিদের বিনিময়ে আটক বাঙালিদের প্রত্যার্পণ এবং এখানকার অবাঙালিদের পাকিস্তানে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সুস্পষ্ট প্রস্তাব করেছেন ইন্দিরা গান্ধী।

হাকসার কোনও মিশনে আসেননি

ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, মিস্টার হাকসার কোনও মিশন নিয়ে এখানে আসেননি। তার সঙ্গে তিনি যে আলোচনা করেছেন তা দু'দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে। এই ধরনের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা প্রায়ই হয়ে থাকে। এ ছাড়া সর্বশেষ পরিস্থিতির আলোকে তারা উপমহাদেশের সমস্যাগুলো নিয়েই আলোচনা করেছেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, তাদের এই আলাপ স্বাভাবিক কূটনৈতিক যোগাযোগ ব্যবস্থার অংশ মাত্র, নাটকীয় বা বিশেষ কোনও বিষয়ের ওপর নয়।

 

দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল করার ব্যবস্থা

বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির সুষ্ঠু বণ্টন ও মূল্য স্থিতিশীলতার নিশ্চয়তা বিধানে সরকার কী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে সেই সম্পর্কে এইদিনে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে আলোচনা হয়। বাসসের খবরে বলা হয়, এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শিল্পমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী এইচ এম কামরুজ্জামান, সমবায়মন্ত্রী মতিউর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমদ এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। কামরুজ্জামান বলেন ক্রেতারা যাতে সুষ্ঠুভাবে প্রয়োজনীয় দ্রব্য পায়, সরকার সে জন্য উদগ্রীব। মূল্য স্থিতিশীল করতে সরকার সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে।

 

‘প্রশ্নপত্র ফাঁসে দায়ীদের শাস্তি চাই’

ডিগ্রি ও সাবসিডিয়ারি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডাকসুর সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ছয় ছাত্রনেতা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য যারা দায়ী তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য ছাত্রনেতারা এক যুক্ত বিবৃতিতে দাবি জানিয়েছেন।