লকডাউনে আটকা, দ্বিতীয় ডোজ নেবেন কী করে?

গত ১০ ফেব্রুয়ারি খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনার প্রথম ডোজের টিকা নেন ৭১ বছরের শেখ আব্দুল মাবুদ ও ৬১ বছরের চমন আরা হোসেন। টিকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রী চলে আসেন ঢাকার মেয়ের বাড়িতে। ৬ এপ্রিল তাদের ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু লকডাউন থাকায় খুলনায় ফিরতে পারেননি। তাদের মেয়ে সিরাজুম মুনিরা নীরা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘১১ এপ্রিল টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা তাদের। মোবাইলে ক্ষুদে বার্তাও পেয়েছেন আজ শুক্রবার (৯ এপ্রিল)। কিন্তু টিকা নেবেন কী করে সেটা বুঝতে পারছি না।’

টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে অনেকে ঢাকায় এসেছিলেন। লকডাউনে আটকা পড়েছেন তাদের অনেকে। দ্বিতীয় ডোজ কোথায়, কবে নেবেন তা নিয়ে কোনও নির্দেশনাও পাননি তারা।

৫ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন জারি করে সরকার। আবার ১৪ এপ্রিল থেকেও এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউন দেওয়া হয়েছে। বন্ধ থাকবে যাবতীয় গণপরিবহন। ২০ তারিখের আগে অনেকের পক্ষেই এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাওয়ার সুযোগ নেই। এ অবস্থায় দ্বিতীয় ডোজ কীভাবে নেবেন তা নিয়ে প্রশ্ন অনেকের। আবার যারা চাকরির সুবাদে বদলি হয়েছেন, একই প্রশ্ন তাদেরও।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) এবং কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড ডিপ্লয়মেন্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্রোরা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আপাতত আমরা কিছু করছি না। কারণ প্রথম ডোজের ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যায়। এখনই কেন্দ্র পরিবর্তন করাটা একটু চ্যালেঞ্জিং। সফটওয়্যারের ওপর চাপ পড়বে।’

অফিসিয়ালি কেন্দ্র পরিবর্তন না করলে পরে টিকার সনদ পেতে সমস্যা হবে জানিয়ে অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এই কারণেও আমরা এখন এ নিয়ে কিছু করছি না।

জনমনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে জানালে তিনি জানান, ‘যদি দেখি যে লকডাউন বেশি লম্বা হয়ে যাচ্ছে তখন এ নিয়ে কাজ করবো। আমাদের চিন্তার মধ্যে এটা রয়েছে। আপাতত যেহেতু ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত টিকা দেওয়ার সুযোগ আছে, তখন অপেক্ষা করতে পারি। এর মধ্যে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে গেলে সবাই নিজ নিজ কেন্দ্রে গিয়ে দ্বিতীয় ডোজ নেবেন।’

মানুষের উৎকণ্ঠা কাটানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাবো। সংবাদ সম্মেলনও করবো দ্রুততম সময়ের মধ্যে। সেখানে বিস্তারিত জানানো হবে।’

আপাতত উৎকণ্ঠার কিছু নেই জানিয়ে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, এই টিকা নিয়ে আমাদের দায়িত্বটাই বেশি। কারণ দেশের সবাইকে টিকা দিতে পারাটাই করোনা নিয়ন্ত্রণের বড় কাজ। তাই এ নিয়ে চিন্তা আছে আমাদের।’

প্রসঙ্গত, দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। গত ৮ এপ্রিল পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ৫৫ লাখ ৮৩ হাজার ৫০৭ জন।