রাখাইনে অস্থিতিশীলতা দেশের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের বিষয়: পররাষ্ট্র সচিব

মিয়ানমারে বিদ্যমান অস্থিতিশীল পরিবেশ বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

রবিবার (১৮ এপ্রিল) বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

পররাষ্ট্র সচিব  বলেন, ‘এ মুহূর্তে বাংলাদেশের নিরাপত্তা তেমন সমস্যার মধ্যে নেই। কিন্তু আমাদের একটাই সমস্যা— তারা যদি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর (রোহিঙ্গা) বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে এবং সেটি যদি রাখাইন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে নতুন করে আবারও দলে দলে লোক আসার আশঙ্কা তৈরি হবে। এটাই আমাদের মূল উদ্বেগের জায়গা।’

বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী এ বিষয়ে সজাগ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবার আমাদের যে অবস্থান সেটা হলো, আমরা নতুন কোনও মানুষকে গ্রহণ করার অবস্থায় নেই। যারা আছেন, তাদেরকে নিয়ে আমরা অনেক সমস্যায় আছি।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমাদের যোগাযোগ বাড়ানোর মতো অবস্থা নেই। আমরা অতীতের আলোকে ভেবে ছিলাম— মিয়ানমারের নতুন সরকার গোটা বিষয়টি সহজে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু আমরা দেখছি যে, প্রতিবাদ বাড়ছে বা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির সরকার এখন নিজেই ঘর সামলাতে ব্যস্ত।’

মিয়ানমারে যে নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী আছে, তাদের ওপরে আক্রমণ বা হামলা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ নেই বললেই চলে।’

পররাষ্ট্র সচিব জানান, এরমধ্যে আসিয়ান থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং আমরা জানতে পেরেছি, মিয়ানমারের সরকার প্রধান আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করবো, আসিয়ান বা অন্য কোনও আন্তর্জাতিক উদ্যোগের মাধ্যমে স্থিতিশীলতার জন্য একটি ফর্মুলা তারা বের করবেন। স্থিতিশীলতা থাকলে আলোচনা করতে সুবিধা হবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি গোটা বিষয়টিকে জটিল করে তুলছে। জটিল পরিস্থিতিতে প্রত্যাবাসন তেমন একটা গুরুত্ব পাবে না।’

বাংলাদেশ স্থিতিশীলতা চায় জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘তাদের নিজেদের মধ্যে একটি সমঝোতা হওয়া দরকার— কবে নির্বাচন হবে, এবং কীভাবে হবে।’

উল্লেখ্য, মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর নির্যাতনে ২০১৭ সালে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।