ঈদের আগে লকডাউন শিথিল হবে

ঈদের আগে লকডাউন শিথিল করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মানুষের জীবন-জীবিকা এবং ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য এ চিন্তা চলছে।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) সরকারি বাসভবন থেকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সকালে তিনি এ তথ্য জানান। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন লকডাউন চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে এই লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর বিষয়ে সরকার সক্রিয় চিন্তা করছে। ঈদের আগে অবশ্যই লকডাউন শিথিল করা হবে জীবন ও জীবিকার জন্য। ঈদে কেনাকাটা এবং ঘরমুখী মানুষের যাতায়াতের জন্য শিথিল করা হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এভাবে চিন্তাভাবনা করছে। এ বিষয়ে সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। করোনার এমন পরিস্থিতিতে আমাদের জীবনই এখন হুমকির মুখোমুখি। অনেকে জীবিকার কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষ। আমরা জানি তারা কষ্ট পাচ্ছে। আমি যতদূর জানি, প্রধানমন্ত্রী পরিবহন শ্রমিকসহ যারা বেকার আছেন তাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং ভাসমান মানুষদের মধ্যেও ত্রাণ বিতরণ করেছেন। জেলা প্রশাসকরা বিষয়টি দেখছেন।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন একটা লকডাউন পরিস্থিতিতে আছি। করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ আঘাত হেনেছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তৃতীয় তরঙ্গ শুরু হয়েছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে দ্বিতীয় তরঙ্গ ভয়াবহভাবে আঘাত হেনেছে। আমাদের এখানে ফার্স্ট ওয়েবে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বলতে গেলে একেবারেই কম ছিল। কিন্তু এবার আমরা মৃত্যুর হারে তিন ডিজিটে চলে আসছি। এটা ভয়ংকর একটা চিত্র। টেস্ট যত বেশি হচ্ছে সংক্রমণ ততই বাড়ছে। এ ভেরিয়েন্টটা অত্যন্ত ভয়ংকর। এর সংক্রমণ গতিও বেশি, সংক্রমণও দ্রুত ছড়ায়।’

তিনি বলেন, ‘এক হাজার বেডের একটি হাসপাতাল গতকাল উদ্বোধন করা হয়েছে। আমার মনে হয় এটা আশার সঞ্চার করছে। করোনা পেশেন্টদের চিকিৎসার জন্য আজকে যে হাহাকার, এর অবসান হবে। এ হাসপাতালে আইসিইউ এবং অক্সিজেন সুবিধা সংবলিত অনেক বেড থাকবে। আমরা চিকিৎসা সেবার দিক থেকে যথেষ্ট এগিয়ে আছি।’

মানুষ মাস্ক পরে থুতনিতে

কাদের বলেন, ‘মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজিং এবং ডিস্টেনসিং- এই এ তিনটা বিষয় বজায় রাখতে পারলে আমরা সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবো। মাস্ক পরলেই বেশিরভাগ সমাধান রয়েছে। এটা জেনেও এখনও অবহেলা, এখনও শহরের রাস্তায় বের হলে বেশিরভাগ মাস্ক পরে না। ঢাকা শহরে লকডাউনের মধ্যে মাস্ক পরার প্রবণতা কিছুটা বাড়লেও ততটা বাড়েনি। অনেকে মাস্ক পরলেও তা থুতনির কাছে রেখে দেয়, এতে কোনও কাজ হয় না। থুতনির কাছে লোক দেখানো মাস্ক পরা আর পুলিশ দেখলে থুতনি থেকে উপরে তুলে দেওয়া, এতে তো সমাধান কিছু হবে না। ’

সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রকৌশলীকেদায় নিতে হবে

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার আগে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার দায় পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকেও নিতে হবে। এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে আমি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিচ্ছি।’

বিআরটিএ দালাল প্রসঙ্গে

সেতুমন্ত্রী বলেন,  ‘বিআরটিএ অফিসগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাইরের দালালদের সঙ্গে ভেতরের কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে। এতে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হয়। বিআরটিএ অফিসকে আরও ডায়নামিক করতে হবে। আরও অ্যাকটিভ করতে হবে। অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। বিআরটিসিকে লাভজনক করতে হবে। তা না হলে আপনারাই সময় মতো বেতন পাবেন না। সরকার আর কত লোকসান দেবে।’