আওয়ামী লীগের ২০ দফা সুপারিশ

খাদ্যশস্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কমানো এবং জনসাধারণ যাতে এসব দ্রব্য ন্যায্যমূল্য পেতে পারে তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর পক্ষ থেকে ১৯৭৩ সালের এইদিন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ২০ দফা সুপারিশ পেশ করা হয়। এই সুপারিশে সীমান্তের পাঁচ থেকে দশ মাইল পর্যন্ত এলাকায় সরকারি উদ্যোগে বাধ্যতামূলকভাবে খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা এবং দেশের অভ্যন্তরে খাদ্যদ্রব্যের বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের বিভিন্ন দ্রব্য রফতারি বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।

এ ছাড়া সৎ নিষ্ঠাবান ও সমাজসেবীদের নিয়ে ইউনিয়ন ফুড কমিটিগুলোকে পুনর্গঠন, সকল শহরে কালক্রমে রেশনিং ব্যবস্থা প্রবর্তন, ভুয়া রেশন কার্ড উদ্ধার করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থাসহ আরও কিছু সুপারিশ করা হয়।

পাকিস্তানের বর্বরতা নিয়ে বিশ্ব সমাজের প্রতি রাষ্ট্রপতি

গভীর রাতে হানা দিয়ে হাজার হাজার বাঙালি গ্রেফতার করার পাকিস্তানের বর্বরোচিত কাজের নিন্দা করেন রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। বিশ্ব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান, পাকিস্তানের হাজার হাজার বাঙালিকে গ্রেফতার করে দূরবর্তী স্থানে পাঠানোর খবরে তারা যেন বিবৃতি দেন।

রাষ্ট্রপতি মন্তব্য করেন, মানবসভ্যতার প্রতি পাকিস্তানের কোনওরকম সম্মান থাকলে এই মুহূর্তে তাদের সব পাগলামি ছাড়তে হবে। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগে সংবাদটি গ্রহণ করেছে।

ইসলামাবাদে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের বাঙালিদের বন্দিশিবির হতে গ্রেফতার করার ঘটনায় ভারতীয় লোকসভাতেও কয়েকজন সদস্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। জনসমগ্র নেতা অটলবিহারি বাজপেয়ি, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির মার্কসবাদী নেতারা পাকিস্তানি কার্যক্রমের প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সরকারের কাছ থেকে একটি বিবৃতি দাবি করেন। এরা সবাই লোকসভার সদস্য।

বাংলাদেশ সরকারের নিন্দা

ইসলামাবাদে দুদিন আগে বিপুলসংখ্যক বাঙালি আটক করার পাকিস্তানি তৎপরতায় বাংলাদেশ সরকার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে। একজন মুখপাত্র বলেন, নিরাপত্তার নামে পাকিস্তানের নির্যাতন চালানো হচ্ছে। মুখপাত্র আরও বলেন, বাঙালিদের ওপর এ ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীন ও অমানুষিক নির্যাতন করা থেকে পাকিস্তানকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে মানবিক সমস্যাবলীর সমাধানের ব্যাপারে পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা এক যুক্ত বিবৃতিতে পাকিস্তানে আটক নিরাপরাধ হাজার হাজার বাঙালিকে গ্রেফতারের নিন্দা করেন এবং অবিলম্বে আটক বাঙালিদের ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানান। বিবৃতিতে তারা দেশের শান্তিকামী জনগণ বিশেষ করে ছাত্র যুব সমাজের কাছে এই ঘটনার নিন্দায় এগিয়ে আসা এবং এ ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

সোহরাওয়ার্দীর ঘটনায় বঙ্গবন্ধুর তদন্তের নির্দেশ

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের একজন মুক্তিযোদ্ধা ও একজন শ্রমিকের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে পাঁচ রোগীসহ ৭ জন আহত হয়। সারাদিন ধরে হাসপাতাল এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে। পুলিশ সূত্রে প্রকাশ করা হয়, দশটার দিকে লাইন ভেঙে টিকিট সংগ্রহের চেষ্টা করলে এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও এক শ্রমিকের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি ও পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। উপস্থিত জনগণের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে হাসপাতালের বিপরীত দিকের মুক্তিযোদ্ধাদের বিশ্রামাগার থেকে একদল মুক্তিযোদ্ধা এসে হাসপাতালের আউটডোর বন্ধ করে দেয়।