(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ২৩ মে’র ঘটনা।)
আন্তর্জাতিক জুলিও কুরি শান্তি পদক অনুষ্ঠানে পুরস্কার গ্রহণের পর বিশ্বশান্তি আন্দোলনের বীর সেনানী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ভাষণে বলেন, এ সম্মানের জন্য আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু এই সম্মান কোনও ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়। এ সম্মান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের আত্মদানকারী শহীদদের। জুলিও কুরি শান্তি পদক সমগ্র বাঙালি জাতির। আমার দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের।
নিপীড়িতের কল্যাণে সবার বন্ধুত্ব চাই
জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন বিশ্বশান্তি আমার জীবন দর্শনের অন্যতম মূলনীতি। নিপীড়িত-নির্যাতিত এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী মানুষ- তা যে স্থানেরই হোক না কেন, তাদের সঙ্গে আমি রয়েছি।
রাজধানী ঢাকায় এইদিন তিন দিনব্যাপী শান্তি সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্ব শান্তি পরিষদ। শেরে বাংলা নগরে অনুষ্ঠিত সম্মেলন উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু।
পদক প্রদানের পর বিশ্বশান্তি সংগ্রামের দুই মহান সেনানী বঙ্গবন্ধু ও রমেশচন্দ্র একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন।
বঙ্গবন্ধু শান্তির অগ্রদূত
বিশ্ব শান্তি পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল রমেশচন্দ্র শুধু এশিয়ায় নয়, সারা বিশ্বে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শক্তিগুলোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শক্তিগুলোর ঐক্য ছাড়া সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা সম্ভব নয় বলে তিনি জানান।
বিশ্ব নেতাদের বাণী
ঢাকায় এশীয় শান্তি সম্মেলনের সাফল্য কামনা করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা সম্মেলনে উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন বাণী পাঠান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী তার বাণীতে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি পদক প্রদান করা হচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কেবল বাংলাদেশের নেতা নন, তিনি সমগ্র জাতির অন্তরে প্রজ্জ্বলিত স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।
শ্রীমতি গান্ধী আস্থা প্রকাশ করে বলেন, এশীয় শান্তি সম্মেলন এশীয় দেশগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা জোরদার করবে।
সবশেষে শান্তির সৈনিকদের অভ্যর্থনা জানিয়ে সম্মেলনের সাফল্য কামনা করে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু।