(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ২৬ জুনের ঘটনা।)
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদিন সকল শ্রেণির জনসাধারণের প্রতি যেখানেই সম্ভব বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ‘বৃক্ষরোপণ পক্ষ’ সফল করার আহ্বান জানান। ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই থেকে বৃক্ষরোপণ পক্ষ শুরু হওয়া কথা।
বাসসের খবরে প্রকাশ, ‘বৃক্ষরোপণ পক্ষ’ উপলক্ষে এক আবেদনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি প্রচেষ্টা সফল করার জন্য এই সময়ে বেশি করে বৃক্ষরোপণ করা প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য। কারণ, জনগণের সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া শুধু সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে এই বিরাট কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।’ প্রধানমন্ত্রী ‘বৃক্ষরোপণ পক্ষে’ সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার প্রতিনিধিদের নির্দেশ দেন।
বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে সরকারি মালিকানাধীন বন খুবই সীমিত। দেশের বর্তমান চাহিদা পূরণে এটা যথেষ্ট নয়।’ তিনি বলেন যে ‘কাঠের জিনিসের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে, নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে, কৃষি জমি কমে যাচ্ছে এবং উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে পশু পাখির সংখ্যারও।’ বঙ্গবন্ধু ছাত্র শিক্ষক কৃষকসহ সকল জনসাধারণের প্রতি মূল্যবান ও ফলের গাছ লাগানো এবং উদ্যোগকে সফল করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বন বিভাগ ভোলা জেলায় পহেলা জুলাইয়ের আগে এবং ১৫ জুলাইয়ের পরে গাছের চারা সরবরাহ করবে।’
এই দিন গণভবনে শহীদ অধ্যাপক আনোয়ার পাশা রচিত মুক্তি-সংগ্রামভিত্তিক উপন্যাস ‘রাইফেল রোটি আওরাত’ থেকে বঙ্গবন্ধুকে পড়ে শোনান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ ড. কাজী আব্দুল মান্নান।
পাকিস্তানের চিঠি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে
পাকিস্তানে অফিসার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠান সম্পর্কে পাকিস্তানের সর্বশেষ চিঠিটি এখন বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে পরীক্ষা করে দেখছে। এদিন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র দফতর সূত্রে এ কথা উল্লেখ করা হয়। বাসসের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ পররাষ্ট্র দফতর সূত্রে পাকিস্তানের চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
ভারতে সরকারি মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে পাকিস্তানের বক্তব্য সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ভারতের রাজনৈতিক কমিটির বৈঠকেও পাকিস্তানের ব্যাপারটি বিশেষভাবে বিবেচনা করে দেখা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বিদেশ থেকে ফিরে এসে রাজনৈতিক কমিটির বৈঠকে বসবেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘উপমহাদেশে বর্তমান অচলাবস্থা ভাঙার জন্য বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রস্তাব সম্পর্কে পাকিস্তানের সর্বশেষ বার্তাটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার পরীক্ষা করে দেখছে।’
১৯৭৩ সালের ২৭ জুন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এই চুক্তি অনুযায়ী প্রতিশ্রুত পণ্যদ্রব্যের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ২৭ জুনের মধ্যে সরবরাহ সম্ভব হবে না। এই সময়ের মধ্যে ভারত থেকে যে পরিমাণ দ্রব্য বাংলাদেশ আনার কথা, তাও সম্ভব না। এক সরকারি প্রেসনোটে বলা হয়, এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও ভারত সরকার উভয়ই ‘সীমিত দায় পরিষদ’ ব্যবস্থার অধীনে বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়িয়েছে।