‘আফগান অস্থিরতায় কেউ যেন বাংলাদেশে ফায়দা লুটতে না পারে’

মার্কিনসহ অন্যান্য দেশের সৈন্যরা আফগানিস্তান থেকে চলে যাচ্ছে। তালেবানসহ অন্যদের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী দেশটিতে পশ্চিমা বিশ্বের সেনাদের যে উপস্থিতি ছিল, তা এখন প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে অশান্ত হয়ে উঠছে আফগানিস্তান। একইসঙ্গে আশঙ্কা করা হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতি এই অঞ্চল বা গোটা বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। এ কারণেই প্রতিবেশী হিসেবে আফগানিস্তানের ঘটনাবলির প্রতি নজর রাখছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে কেউ যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে, সে বিষয়েও সজাগ আছে সরকার।

আফগান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ ‍বিন মোমেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আফগানিস্তানের অস্থিরতার কারণে এখানে কেউ যাতে ফায়দা লুটতে না পারে, সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখা উচিত বলে আমি মনে করি।’

অতীতে অনেকে আফগানিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে বাংলাদেশে নাশকতামূলক কার্যক্রম চালিয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এখানে কারও সঙ্গে কোনও যোগাযোগ হলো কিনা এটি যথাযথ কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই সজাগ দৃষ্টি রাখছেন।’

আফগানিস্তান আমাদের প্রতিবেশী দেশ, সার্কের সদস্য এবং ওআইসির সদস্য জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চাই আফগানিস্তানে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বিরাজ করুক।’

বাংলাদেশের জন্য আফগানিস্তান খুবই গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতির ওপরে তীক্ষ্ণ নজর রাখছি এবং সব পক্ষকে আহ্বান জানাই, তারা যেন সংযত আচরণ করে।’

তালেবানকে একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে পশ্চিমা বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে, সমঝোতা করেছে এবং সৈন্য প্রত্যাহার, সবই হচ্ছে একটি বোঝাপড়ার মাধ্যমে বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘যে সমঝোতা হয়েছে সেটি এর সঙ্গে জড়িত পক্ষগুলো মেনে চলুক, সেটাই বাংলাদেশ চায়। তবে সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, তালেবানরা কিছু আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে।’

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এটি সমঝোতার অংশ কিনা আমি জানি না, তবে সেখানে কোনও বিশৃঙ্খল পরিবেশ বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা খারাপ হয়ে যাক, এটি আমাদের কাম্য নয়।’

আফগানিস্তানে কয়েকটি বাংলাদেশি এনজিও কাজ করে। কাবুলে আমাদের দূতাবাস নেই। কিন্তু ঢাকায় আফগানিস্তানের দূতাবাস রয়েছে বলে তিনি জানান।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘ওই দেশের অনেক ছাত্রছাত্রী আমাদের এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে, বিশেষ করে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব ওম্যানে।’

আফগানিস্তানে অবস্থিত বাংলাদেশিদের ফেরত আনা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও এ ধরনের কোনও অনুরোধ পাইনি। তবে বেশ কয়েকটি দেশ তাদের বেসামরিক নাগরিকদের ফেরত নিয়ে যাচ্ছে।’