নদীভাঙন থেকে খুলনাকে রক্ষার আশ্বাস বঙ্গবন্ধুর

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউনআজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ১০ জুলাইয়ের ঘটনা।)

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভৈরব নদীর ভাঙন থেকে শিল্পনগরী খুলনাকে রক্ষা করার জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন। আব্দুল বারীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কক্ষে দেখা করলে প্রধানমন্ত্রী এই আশ্বাস দেন। এই সঙ্গে সাক্ষাৎ দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন‑ বাবর আলী ও আবুল খায়ের। তারা ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ধৈর্য সহকারে তাদের বক্তব্য শোনেন এবং শহর রক্ষা করার সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন। তিনি আরও বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমদ শিগগির সফরে যাবেন এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। দক্ষিণাঞ্চলের এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিবেন তিনি।

চট্টগ্রামের প্রতিনিধিদলকে বঙ্গবন্ধু
পার্বত্য চট্টগ্রামের স্কুল কলেজগুলোর ছাত্রদের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে তার সংসদ ভবনের কক্ষে সাক্ষাৎ করেন। দলের নেতৃত্ব করেন জাতীয় সংসদের সদস্য সুদীপ্ত দেওয়ান। খবরে প্রকাশ‑ প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীকে পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষাসমূহ সম্পর্কে অবহিত করেন এবং বঙ্গবন্ধু ধৈর্য সহকারে তাদের বক্তব্য শোনেন। বঙ্গবন্ধু সমস্যাগুলো সহানুভূতির সাথে বিবেচনার আশ্বাস দেন।

দৈনিক ইত্তেফাক, ১১ জুলাই ১৯৭৩ঢাকা আলোচনা সম্পর্কে
প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বিশেষ দূত পি এন হাকসার নয়াদিল্লিতে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের ন্যায্য উদ্যোগ গ্রহণে পাকিস্তানের অহেতুক বিলম্বে পাকিস্তানে বাঙালি, বাংলাদেশে পাকিস্তানি ও পাকিস্তানের যুদ্ধবন্দীরা তাদের পরিবার-পরিজনের সাথে মিলিত হতে পারছেন না। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার কৌশলগত দিক নিয়ে বাংলাদেশের নেতাদের সাথে চারদিনব্যাপী আলোচনার পর ঢাকা থেকে নয়াদিল্লি পৌঁছে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। ভারত-বাংলাদেশ প্রস্তাবের প্রতি পাকিস্তান যেভাবে সাড়া দিয়েছে তাতে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, যা হোক পাকিস্তান আলোচনায় সম্মত থাকলে ভারত তাতে রাজি।

প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বিশেষ দূত হাকসার ঢাকা থেকে ফিরে দিল্লিতে বলেন যে‑ বাংলাদেশের নেতাদের সাথে তার আলোচনায় পাকিস্তানের সাথে আলোচনার বিষয়বস্তু ও দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মতৈক্য হয়েছে। বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে অবস্থানকারী পাকিস্তানি, ভারতে আটক পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দী ও পাকিস্তানে আটক বাঙ্গালীদের সমস্যাবলী আলোচনায় আগ্রহী। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত। হাকসার বলেন, বাংলাদেশের নেতাদের সাথে আলোচনার পর তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিংকে জানিয়ে দিয়েছেন যে পাকিস্তানের সাথে আলোচনার জন্য ২৪ জুলাই হবে উপযুক্ত তারিখ।

বাংলাদেশ অবজারভার, ১১ জুলাই ১৯৭৩অক্টোবরে বঙ্গবন্ধুর জাপান সফর
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে জাপান সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। এদিন ঢাকায় এ তথ্য ঘোষণা করা হয়। বাসস পরিবেশিত খবরে প্রকাশ‑ জাপান ও বাংলাদেশ সরকার সফরের কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। আগামী অক্টোবর মাসের শেষ দিকে এই সফর শুরু হতে পারে বলে আশা প্রকাশের কথাও জানানো হয়।

এদিকে আনরড প্রধান অ্যাম্বাসেডর কোস্টা এদিন সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বলে বাসদ সংবাদ পরিবেশন করে।