শততম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে  মরক্কোর স্বীকৃতি

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ১৩ জুলাইয়ের ঘটনা।)

শততম দেশ হিসেবে ১৯৭৩ সালের এইদিন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় মরক্কো। কূটনীতিকরা বলছেন, শততম দেশ হিসেবে মরক্কোর এই স্বীকৃতিদান বাংলাদেশের জন্য আরেকটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বাসসের খবরে প্রকাশ করা হয়, এদিন দুদেশের রাজধানী থেকে যুগপৎ এই স্বীকৃতি দানের কথা ঘোষণা করা হয়। মরক্কো জানায়, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তার সরকার বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মরক্কোর এই স্বীকৃতি দানের ঘোষণাটিকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করার কারণ, এর মাধ্যমে প্রমাণ হলো মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো যাতে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেয় পাকিস্তানের এমন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকার কূটনৈতিক মহল মনে করে মরক্কোর স্বীকৃতিদানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এমন সময় এই স্বীকৃতি এলো যখন নিরপেক্ষ শীর্ষ সম্মেলনের দিনক্ষণ প্রায় চলে এসেছে। সেপ্টেম্বরে আলজেরিয়ায় নিরপেক্ষ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কূটনৈতিক মহলের ধারণা করে, এরপর আরব বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্বীকৃতির বিষয়ে নতুন করে ভাববে।

খবরে বলা হয়, কিছুদিন আগে মরক্কোর প্রেসিডেন্ট এর একজন বিশেষ দূত বাংলাদেশ সফর করে গেছেন।তিনি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দানের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। স্মরণ করা যেতে পারে যে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশেষ দূত ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোয় গিয়ে সেসব দেশের নেতাদের কাছে বাংলাদেশের ভূমিকা ব্যাখ্যা করেছেন।

রিলিফ সামগ্রী পড়ে আছে

পাবনা সদর মহকুমা বন্যা উপদ্রুত এলাকায় অধিকাংশ জায়গায় ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি। ফলে বন্যা পীড়িত হাজার হাজার পরিবার অন্ন-বস্ত্রের অভাবে দুর্দশার মধ্যে দিনযাপন করছে। এলাকায় এমন অনেক পরিবারের সাক্ষাৎ পাওয়া গেছে যারা বস্ত্রের অভাবে ঘর থেকে বাইরে আসতে পারছেন না। এমন অনেক পরিবার রয়েছেন যারা খাদ্যের অভাবে থেকে বেঁচে আছেন। সবচাইতে আশ্চর্য ব্যাপার হচ্ছে যেখানে শত শত পরিবার অনাহারে দিন কাটাচ্ছে সেখানে কয়েকটি এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী চেয়ারম্যান  ও কমিটির সদস্যদের ঘরে পড়ে রয়েছে। রিলিফের কাপড় পচে যাচ্ছে, ইঁদুরে খাচ্ছে।

বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেওয়া প্রকাশিত তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদনে বলা হয় শত শত পরিবার আশ্রয়ের অভাবে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। অথচ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের হাতে স্বল্পমূল্যে বাড়ি নির্মাণের জন্য লক্ষাধিক টাকা রয়েছে। এর আগে বন্যা অধ্যুষিত এলাকাগুলো পরিদর্শনের সময় বঙ্গবন্ধু বারবার হুঁশিয়ার করে দিয়েছিলেন যে কোনও মূল্যে তিনি ত্রাণ সংগ্রহ করে পাঠাবেন কিন্তু তার সুষ্ঠু বণ্টন যেন হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।

শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান

সরকার শিশু রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের  কাজে অবহেলা করে বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি আদায়ের উদ্দেশে চাপ প্রয়োগের নীতি অনুসরণ না করার জন্য দেশের শ্রমিক সমাজ ও অন্যান্য কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান। এদিন এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও অপরাপর সুবিধাদি বিশ্লেষণ করে একটি উপযুক্ত সুপারিশ পেশ করার জন্য সরকার একটি শিল্প শ্রমিক মজুরি কমিশন গঠন করেছে। কমিশনকে তিন মাসের মধ্যে সুপারিশ পেশ করতে বলেছে। এমতাবস্থায় কমিশনের সুপারিশ পেশ সাপেক্ষে সকল প্রকার ধর্মঘট ও চাপ প্রয়োগ থেকে শ্রমিকদের বিরত থাকা উচিত বলে সরকার মনে করে।