বকেয়া বিল আদায় ও ভুয়া কার্ড উদ্ধারে অভিযান

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ১৯ জুলাইয়ের ঘটনা।)

সরকার দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভুয়া রেশন কার্ড ও টেলিফোন উদ্ধার, বিভিন্ন সরকারি আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার বকেয়া বিল আদায় এবং সরকারি বাড়িঘর বেআইনি দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করার জন্য এক ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে। ১৯৭৩ সালের এই দিন সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যম জানায়, ঢাকা শহরে জুলাইয়ের শেষে এই উদ্ধার অভিযান শুরু হবে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কারফিউ জারি করে তল্লাশি চালানো হবে। অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতায় সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এই কর্মসূচি কার্যকর করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়। অভিযানকে সফল করার জন্য সরকার জনগণের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করে। প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কর্মসূচি সার্বিক সমন্বয় করবেন বলে জানানো হয়।

বঙ্গবন্ধু যুবকদের অভিবাদন নেবেন

সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংহতি সপ্তাহের সমাপ্তি দিনে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান সকাল নয়টায় ঢাকা স্টেডিয়ামে অভিবাদন গ্রহণ করবেন। বিপিএন-এর খবরে বলা হয়, পূর্ব জার্মানির রাজধানী বার্লিনে আয়োজিত বিশ্ব যুব ছাত্র উৎসবের জাতীয় প্রস্তুতি কমিটির উদ্যোগে এই সপ্তাহ পালন করা হয়। সে বছর ১৬ জুলাই নৌপরিবহন ও অসামরিক বিমানমন্ত্রী জেনারেল এমএজি ওসমানী এই সপ্তাহের উদ্বোধন করেন।

ফারাক্কা থেকে পশ্চিমবঙ্গের জন্য ২০ হাজার কিউসেক পানি যথেষ্ট

নয়াদিল্লিতে বিশেষজ্ঞদের মতে, খরা মৌসুমে হুগলি নদীর পানিপ্রবাহ অব্যাহত রাখার জন্য ফারাক্কা থেকে ভারতের সর্বোচ্চ ২০ হাজার কিউসেক পানি প্রয়োজন হবে। খরা মৌসুমে হুগলি নদীতে লঞ্চ চলাচল এবং কলকাতা বন্দরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা সচল রাখার জন্য পশ্চিম বাংলায় ফারাক্কা থেকে এই পরিমাণ পানি যথেষ্ট। তারা বলেন, এমনকি খরা মৌসুমে পানি একেবারে বন্ধ হয়ে গেলেও তাতে ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের কোনও ক্ষতি হবে না, এতে বাংলাদেশের জন্য ৪০ হাজার কিউসেক পানি হয়ে যাবে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোর জন্য দরকার হবে ৪৯ হাজার কিউসেক পানি। সম্প্রতি ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এই অভিমত নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, হুগলি নদীর জন্য কত পানি ছাড়া হবে তা নির্ভর করবে এ সম্পর্কিত কমিটির রিপোর্টের ওপর। গঙ্গা থেকে ফিডার ক্যানেল দিয়ে সর্বোচ্চ ২০ হাজার কিউসেক পানি ছাড়ার কথা কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। কমিটি তার রিপোর্টে ফিডার ক্যানেল দিয়ে ২০ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারিত করে বলে দিয়েছে যে ২৭ এপ্রিল থেকে বেশি পানি ছাড়া হলে তা বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটবে।

কমিশনের রিপোর্টের পূর্ণ বিবরণ ছাপা হয়

১৯৭২ সালের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় বেতন কমিশনের নিয়োগ কার্যকর করা হয় এবং পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজতান্ত্রিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের আলোকে কমিশন সরকারি খাতের প্রতিরক্ষা দফতর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অবশ্য যেসব শ্রমিক সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিতব্য বেতন বোর্ডের আওতায় আসবেন তাদের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে না। আওতাধীনে সব কর্মীর বর্তমান বেতন কাঠামো ব্যাপকভাবে প্রচার করবেন এবং তাদের জন্য একটি জাতীয় বেতন কাঠামো প্রস্তাব পেশ করবেন। কমিশন মত প্রকাশের লক্ষ্যে এই সময়কালে একাধিক অধিবেশনে মিলিত হয়। যেহেতু বেতন কাঠামো প্রশাসনিক কাঠামোর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত, কমিশনের ওপর অর্পিত দায়িত্ব অনুযায়ী প্রস্তাবিত প্রশাসনিক কাঠামো এবং আঞ্চলিক বিন্যাস সম্পর্কে আলোচনার জন্য কমিশন কমিটির সঙ্গে সমন্বিত বৈঠকের আয়োজন করে। কমিশন কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করে যে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বেশ কিছু সময় দেওয়ায় এবং প্রশাসন ও বেতন কাঠামো সম্পর্কে তাদের সুনির্দিষ্ট মতামত দেওয়ার কারণেই কমিশন যথেষ্ট উপকৃত হয়েছে।