করোনা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ প্রথম টার্গেট

করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক মন্দাভাব এবং বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। যদিও অন্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ ভালো করছে, তার পরও কোভিড থেকে উত্তরণ সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ এখন আমাদের প্রথম টার্গেট।’

তিনি জানান, বিভিন্ন খাত যেমন: কৃষি, শিল্প, তৈরি পোশাক, রেমিট্যান্স এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে যে প্রভাব পড়েছে সেটি কাটিয়ে ওঠাই প্রধান লক্ষ্য।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘কোভিড থেকে উত্তরণ একক কোনও দেশের পক্ষে সম্ভব নয়। এ জন্য বিদেশের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছি, যাতে করে শুধু বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটাবে সেটা নয়, অন্য কোনও দেশকে যদি আমরা কোনও সহায়তা করতে পারি; সে বিষয়েও আমরা সংবেদনশীল আছি।’

সাপ্লাই চেইন বিঘ্ন

কোভিডের কারণে বৈশ্বিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাপ্লাই চেইনে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটেছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টিকে নেতিবাচকভাবে না দেখে কীভাবে আমরা উন্নয়নে ব্যবহার করতে পারি সেটি ভেবে দেখার বিষয় রয়েছে।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট বিভিন্ন দেশে ধাবিত হচ্ছে এবং এর কিছু অংশ যদি আমরা পাই তাহলে সেটি উপকারে আসবে। এছাড়া, অনেক দেশ বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে থাকে, আমরা যদি এখানে ঢুকতে পারি তবে আমাদের রফতানি বাড়বে।’

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘কোভিড সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ থেকে কৃষি পণ্য পাঠানোর জন্য অনুরোধ পেয়েছিলাম এবং পণ্য পাঠানোর পরে তার ফল এখন আমরা আস্তে আস্তে পাচ্ছি। সুতরাং, আমাদের রফতানি বহুমুখীকরণের একটা সুযোগ এসেছে। এছাড়া বাজার বহুমুখীকরণের বিষয়টি সামনে চলে এসেছে।’

বৈদেশিক শ্রম বাজার

বিদেশের শ্রমবাজার সম্পর্কে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে অনেক দেশ এখন শ্রমিক নেওয়া কমিয়ে দেবে। সে জন্য আমাদের নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে এবং একইসঙ্গে দক্ষতা বাড়াতে হবে।’

বৈশ্বিক ক্ষেত্রে যে পরিবর্তনগুলো হচ্ছে সেগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আমাদের কিছু নীতির পরিবর্তন করতে হতে পারে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘এর পাশাপাশি নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে এটা যে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ফলে বৈশ্বিক কিছু সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই নতুন করে কাজ করার সুযোগ আছে।’ বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন দেশ ও জোটের যে বাণিজ্যিক অ্যারেঞ্জমেন্ট রয়েছে সেটিকে আবার ঢেলে সাজানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।