মৃত্যু বারবার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

জনগণের জন্য রাজনীতি করতে গিয়ে বারবার মৃত্যুকে সামনে পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাবার পথ ধরেই দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছি। 

শনিবার একুশে আগস্ট উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।

সরকার প্রধান বলেন, গ্রেনেড, বোমা, গুলি অনেক কিছুই তো চোখের সামনে দেখেছি। বারবার মৃত্যুকে সামনে পেয়েছি। বারবার আমার সামনে মৃত্যু এসে দাঁড়িয়েছে। যেভাবে হোক আমি বেঁচে গেছি। আমাকে আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই মানুষ দু’বেলা খাবার পাচ্ছে। হয়তো আওয়ামী লীগ না থাকলে এই দুঃসময়ে কেউ মানুষের পাশে দাঁড়াতো না।

আগস্ট আওয়ামী লীগের জন্য শোক আর কষ্টের বার্তা নিয়ে আসে- মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জানি না আল্লাহ কেন বারবার বাঁচাচ্ছেন। ১৫ আগস্টও দেশের বাইরে যাওয়ার কথা নয়, কিছুতেই যাবো না। তারপর চলে যেত হলো। রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে গেলাম আমি। রাসেলকেও নেওয়ার কথা, কিন্তু সে অসুস্থ ছিল। ছয়টি বছর দেশে আসতে পারিনি, আসতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী করার পর অনেকটা জোর করেই ফিরেছি। 

তিনি বলেন, দেশে ফেরার পর যখন সেখানে গেছি, প্রতিটি স্থানেই বোমা হামলা-মঞ্চ পুড়িয়ে দেওয়া হলো। নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। সুস্থভাবে তো কখনও রাজনীতি করতে পারিনি। ঘুরতে পরিনি। প্রতিটি পদে পদে বাধা অতিক্রম করে দলকে সুসংগঠিত করে আজকে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে পেরেছি।

গ্রেনেড হামলার বিচারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ঘটনার বিচার হয়েছে। কয়েকজনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। কয়েকজনের যাবজ্জীবনও হয়েছে। তারা বিদেশে আছে।

বিএনপির ‍গুম-খুনের অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে গুম খুন বলেন। হারিছ চৌধুরী আর সালাউদ্দিন গুম হয়ে গেছেন। তাদের দু’জনই তো বেরুলো। একজন ভারত, আরেকজনের খোঁজ পাওয়া গেলো, এখন নাকি লন্ডনে। এরা বাইরে বলে বেড়ায় গুম। পরে আবার খোঁজ পাওয়া যায়, তারা নিজেরাই নিজেদের লুকিয়ে রাখে। এ রকম ঘটনাও বাংলাদেশে ঘটে।

শেখ হাসিনা বলেন, আল্লাহ হয়তো মানুষকে কাজ দেন। আর সেই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সময় দেন। আমি বাবা-মা, ভাইসহ আপনজন হারিয়েছি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তো তাদের বেঁচে থাকার সব আশা আকাঙ্ক্ষা হারিয়ে ফেলেছিল। স্বাধীনতার সময় দেওয়া আত্মত্যাগ মুছে ফেলা হয়েছিল।

একুশে-আগস্ট

বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরেই মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন দেশের মর্যাদা পেয়েছে। করোনাভাইরাস আমাদের কিছু সময়ের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। আশা করি এটারও উত্তরণ ঘটিয়ে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে পারবো।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা ও বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল,  ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী প্রমুখ।