নৌ-বিমান বাহিনীতে দক্ষরা যেন পদোন্নতি পান: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভবিষ্যতে যারা দক্ষতার সঙ্গে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, নৌ ও বিমান বাহিনীর সেসব সদস্যকে পদোন্নতি দিন।

রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) নৌ ও বিমান বাহিনীর ‘নির্বাচনি পর্ষদ (প্রথম পর্ব) ২০২১’-এর সভায় অংশগ্রহণ (ভার্চুয়াল) করে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ঢাকা সেনানিবাসের নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনী সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এ সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন সরকার প্রধান।

নৌ ও বিমান বাহিনীর নির্বাচনি পর্ষদের সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা পদোন্নতির জন্য যে পদ্ধতিগুলো নিয়েছেন, টিআরএসিই-ট্রেস (টেবুলেটেড রেকর্ড অ্যান্ড কম্পারেটিভ ইভালুয়েশন), আমি মনে করি, এটা একটা আধুনিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতির ভিত্তিতেই আপনাদের জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা দিয়ে আপনারা নির্বাচনি পর্ষদ আগামী দিনে যারা দক্ষতার সঙ্গে নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনী পরিচালনা করবেন, তাদের নির্বাচিত করবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দক্ষ যারা, তারা প্রমোশন পেয়ে প্রত্যেকটি বাহিনী পরিচালনার দায়িত্ব পাবেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে, বাংলাদেশ চলবে এবং বাংলাদেশ হবে ভবিষ্যতে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘আমি এটাও বলবো যে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকে কর্তব্য পালনে অনেক দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেন। কাজেই তারাও যেন অবহেলিত না হন সেদিকটাও আপনারা বিবেচনা করবেন।’

করোনা মহামারির সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীসহ সব প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, ‘দুর্যোগকালে মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সব সময় এ কাজটি করে থাকে। যখনই দুর্যোগ এসেছে, সাধারণ মানুষ আপনাদের সেবা পেয়েছে।’

নৌ-বাহিনী ও বিমান বাহিনীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী আজ শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও অত্যন্ত সুশৃঙ্খল, দক্ষ এবং পেশাদার বাহিনী হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে। তাদের আত্মত্যাগ ও কর্তব্যনিষ্ঠা বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছে বিরল সম্মান ও মর্যাদা, যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও অত্যন্ত উজ্জ্বল করেছে।’

নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর নির্বাচনি পর্ষদের সদস্যদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে, আমি শুধু শাসক নই, বাংলাদেশের মানুষের সেবক। জনগণের সেবা ও কল্যাণ করাকেই আমি সব থেকে বড় কাজ বলে মনে করি। সেই ব্রত নিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি এবং দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা সব সময় কামনা করি।’

রাষ্ট্র পরিচালনায় যখনই প্রয়োজন হবে, তখনই সশস্ত্র বাহিনী মানুষের পাশে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানের নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

আইএসপিআর জানায়, নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের পদোন্নতির লক্ষ্যে বাহিনীর সদর দফতরে আয়োজিত নৌবাহিনীর নির্বাচনি পর্ষদের মাধ্যমে ক্যাপ্টেন থেকে কমডোর, কমান্ডার থেকে ক্যাপ্টেন, লে. কমান্ডার থেকে কমান্ডার পদবিতে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এছাড়া বিমান বাহিনীর সদর দফতরে আয়োজিত বিমান বাহিনীর নির্বাচনি পর্ষদের মাধ্যমে বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন থেকে এয়ার কমোডর, উইং কমান্ডার থেকে গ্রুপ ক্যাপ্টেন এবং স্কোয়াড্রন লিডার থেকে উইং কমান্ডার পদে যোগ্য প্রার্থীদের পদোন্নতির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।