‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে সারাবিশ্বে’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ‘দারিদ্র্য বিমোচনসহ সামাজিক নিরাপত্তা অর্জনে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে সারাবিশ্বে।’

রবিবার (৩ অক্টোবর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ‘ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ডে করণীয়’ বিষয়ে সচেতনতামূলক মহড়ায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে এর আয়োজন করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তাদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রতিমন্ত্রীর কথায়, ‘ভৌগলিক অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, ঘনবসতিসহ ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত কোনও না কোনও প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়। ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফণি ও বুলবুল এবং ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলা করতে হয়েছে আমাদের। এসব ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সরকারের পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। এ বছর ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায়ও সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল।’

বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙন, খরা, শৈত্যপ্রবাহ, অগ্নিকাণ্ড, বজ্রপাত ও ভূমিধস দেশের পরিচিত দুর্যোগ। ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মনে করেন, জনসচেতনতা ও পূর্ব প্রস্তুতি থাকলে যেকোনও দুর্যোগ মোকাবিলা করে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়। 

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বক্তব্য রাখছেন

ডা. মো. এনামুর রহমান উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ত্রাণনির্ভর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে দুর্যোগঝুঁকি হ্রাসমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আগাম সতর্কবার্তা প্রচারের ব্যবস্থা করেন। উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবন ও সম্পদ বাঁচাতে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রচারে সিপিপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

একই প্রসঙ্গ টেনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বলেন, “বঙ্গবন্ধু ১৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে সিপিপি’র যাত্রা শুরু করেছিলেন, যারা আগাম সতর্কসংকেত প্রচার এবং সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষের জানমাল রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা রেখে আসছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় সিপিপি’র স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা ৭৬ হাজার ২০ জনে উন্নীত হয়েছে। তাদের ৫০ শতাংশ নারী।’

ত্রাণ সচিব জানিয়েছেন, দেশজুড়ে আধুনিক আবহাওয়ার রাডার ও পূর্বাভাস ব্যবস্থা রয়েছে। উপকূলে পাঁচ হাজারের বেশি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। জরুরি পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 

দুর্যোগে প্রাণহানির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব। তার কথায়, ‘১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ১০ লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে সাম্প্রতিককালে একই মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানি একক সংখ্যায় নেমে এসেছে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রঞ্জিত কুমার সেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ, ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নাজমুল হক এবং বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক লে. কর্নেল জিল্লুর রহমান।