ঢাকা দক্ষিণের অবকাঠামোয় সহযোগিতা করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র

নগর অবকাঠামোর উন্নয়ন ও নগরীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে (ডিএসসিসি) সহযোগিতা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বিকালে নগরভবনের মেয়র কার্যালয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার এ আগ্রহ ব্যক্ত করেন।

সাক্ষাতে ডিএসসিসি মেয়র তাপস করপোরেশনের পক্ষ হতে প্রথমবারের মতো দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে জানিয়ে বলেন, ‘আমরা কোন ধরনের নগর চাই, সেই প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে নগরীর পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা, খাল-জলাশয় উদ্ধার ও জলাবদ্ধতা দূর করা, বুড়িগঙ্গার পাড় ঘেঁষে নান্দনিক পরিবেশ ইত্যাদিসহ ১৮টি ওয়ার্ডে আধুনিক রোড নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠায় মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে। যার আওতায় নগরীর ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি ও প্রতিবন্ধকতা দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। দক্ষিণ সিটির সামগ্রিক উন্নয়নে গৃহীত এসব কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকে আমি আহ্বান জানাই।’

রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বলেন, ‘করপোরেশনের উদ্যোগে সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন খুবই যুগোপযোগী ও উৎসাহব্যঞ্জক। আমি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সরেজমিনে এই এলাকা পরিদর্শন করে বিনিয়োগের আহবান করবো।’

রাষ্ট্রদূত মিলার আরও বলেন, ‘ঢাকা শহরের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভূমিকম্পের মতো ভয়ংকর দুর্যোগ মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। এটি মোকাবিলায় অনেকগুলো ক্ষেত্রে আমরা একযোগে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক কার্যক্রম চালাতে পারি। এ ছাড়াও নগরীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।’

এ সময় ডিএসসিসি মেয়র প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় করপোরেশনের সামগ্রিক প্রস্তুতি ও কেন্দ্রীয় সরকারের সমন্বয় পরিকল্পনা এবং দুর্যোগকালীন জরুরি যোগাযোগে বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতায় ইমারজেন্সি কন্ট্রোল রুম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানান।

পরিবার পরিকল্পনাসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করতে কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে দক্ষিণ সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডে এ কার্যক্রম বিস্তৃত হবে। এই কর্মপরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতামূলক মনোভাব নিঃসন্দেহে কল্যাণ বয়ে আনবে।’

সাক্ষাতে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, নগরীতে উন্মুক্ত স্থান বাড়ানো, করোনার টিকাদান কার্যক্রমসহ বিভিন্ন খাতে পারস্পরিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিতে একযোগে কাজ করতে মেয়র তাপস ও রাষ্ট্রদূত মিলার ঐকবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের মিশন উপ-প্রধান হেলেন লাফিভ, ইউএসএআইডি-এর মিশন পরিচালক ক্যাথরিন স্টিভেন্স, যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর নেলি কেইডস-ড্যানিয়েলস ও ফুড ডিজ্যাস্টার হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্সের অফিস ডিরেক্টর অ্যালেন ডি গুজম্যান।