মিসর ও সিরিয়াকে বঙ্গবন্ধুর উপহার

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ৯ অক্টোবরের ঘটনা।)

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালের এইদিন মিসর ও সিরিয়ায় উপহার হিসেবে ১ লাখ পাউন্ড চা পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনকে নির্দেশ দেন। বাসসের খবরে বলা হয়, আরব ভাইদের প্রতি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে এই উপহার পাঠানো হচ্ছে। কারণইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সেখানে চারেশন করতে হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত সাহিত্যিক ঔপন্যাসিক শ্রী মনোজ বসু এই দিন সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বলে বাসসের খবরে বলা হয়।

১৯৭৩ সালের ১০ অক্টোবরের পত্রিকার একাংশ ত্রিদলীয় কাঠামো চূড়ান্ত

৯ ঘণ্টাব্যাপী আলাপ আলোচনার পর আওয়ামী লীগ, ন্যাপ (মোজাফফর), বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা ত্রিদলীয়সংক্রান্ত ঘোষণা ও সাংগঠনিক কাঠামো সম্পর্কিত বিষয় চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। তিনটি দলের নেতৃবৃন্দঐক্যজোটের নেতা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবহিত করা এবংতার চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পরেরদিন গণভবনে যাওয়ার কথা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৫ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দ্বিতীয় ওশেষ অধিবেশন শেষে আওয়ামী লীগের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট কোরবান আলী অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের জানান, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বৈঠকের পর দু-একদিনের মধ্যে সম্পর্ক সিদ্ধান্তেরকথা ঘোষণা করা হবে।

তিনি আরও জানান, বৈঠকে দলীয়ঐক্যজোটের কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়েছে। উভয়দিনের বৈঠকে কোরবান আলী সভাপতিত্ব করেন। এইদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের জহিরুল কাইয়ুম, আব্দুর রাজ্জাক শেখ ফজলুল হক মনি, মোস্তফা সারোয়ার, আনোয়ার চৌধুরী, সরদার আমজাদ হোসেন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি(মোজাফফর) চৌধুরী হারুনুর রশিদ, আতাউর রহমান, পঙ্কজ ভট্টাচার্য, মতিয়া চৌধুরী এবং বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে কমরেড সালাম ও কমরেড ফরহাদ।

১৯৭৩ সালের ১০ অক্টোবরের পত্রিকার একাংশ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক

নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মার্কিনআবদার প্রত্যাখ্যান নতুন করে আবার যুদ্ধ শুরু করার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য এই রাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক বসে। কিন্তুযুদ্ধ কীভাবে বন্ধ করা যায়—সেই প্রশ্নে সোভিয়েত ইউনিয়ন ওচীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মতবিরোধশুরু হয়। ফলে সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক মুলতবি হয়ে যায়। নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনের শুরুতেই জাতিসংঘ মার্কিন রাষ্ট্রদূতও সিরিয়াতে যুদ্ধ বন্ধের অনুরোধ জানান এবং ৬ অক্টোবর নতুন করে যুদ্ধশুরুর পূর্ববর্তী অবস্থানে ফিরে যেতে বলেন। এই মার্কিন প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তার দেশ প্রস্তাব মেনে নেবে না।

জাতিসংঘে সোভিয়েত ও চীনের প্রতিনিধি দল প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। প্রায় ৮০ মিনিট বৈঠক চলে, মাঝেমধ্যে বৈঠকে বেশ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ শুরুর পূর্বাবস্থায় উভয়পক্ষের সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার মার্কিন প্রস্তাব মেনেনিতে অস্বীকৃতি জানান মিসরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরাইল কর্তৃক দখলকৃত এলাকার চিরস্থায়ী দখল এপ্রস্তাবের উদ্দেশ্য।