সড়কে শৃঙ্খলার বড় সংকট রয়েছে: ওবায়দুল কাদের

পরিবহন ও সড়কে শৃঙ্খলার বড় সংকট রয়েছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এখন মূল সংকট শৃঙ্খলার। এখানে যদি আমরা ব্যর্থ হই তবে আমাদের সব উন্নয়ন ব্যর্থ হয়ে যাবে।

শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সড়ক ভবন অডিটোরিয়ামে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত ‘গতিসীমা মেনে চলি, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সড়কে শৃঙ্খলা আনাই আমাদের চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে কাদের বলেন, দেশে এত রাস্তা, ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, সীমান্ত সড়ক, মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ হচ্ছে। তারপরও আমরা কেন সড়কে শৃঙ্খলা আনতে পারবো না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিআরটিএ’র ড্রাইভিং লাইসেন্স দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে। হাজার হাজার আবেদন, লাইসেন্স দেওয়া শুরু হয়েছে। আমি বলবো, ছুটির দিনে কাজ করে হলেও আটকে থাকা লাইসেন্সগুলো দিয়ে দিতে হবে। এখন লাইসেন্সের অনেক ডিমান্ড। এ জন্য আবেদনকারীরা হাহাকার করছে। এখন জট খুলেছে এটাই আশার বিষয়। আগামীতে আর কোনও জট যাতে না হয় সেটি আমার চাওয়া।

বিআরটিএ’র অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এখানে যারা অপকর্ম ও দুর্নীতি করে তাদের নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যারা সেখানে যাওয়ার জন্য তদবির করে তারা তো কোনও কিছুর বিনিময়ে তদবির করেন। কারণ, সেখানে কিছু লেনদেন আছে। যারা এসব তদবির করে তাকে দায়ী না করে যার জন্য তদবির করে আমি তাকে দায়ী করবো। এগুলো বন্ধ করতে হবে। আমি যতদিন এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি ততদিন কোনও অনিয়ম ও দুর্নীতি মেনে নেবো না।

তিনি বলেন, কখনও দুই পরিবহনের সংঘর্ষে, কখনও তিন চাকার গাড়ি ইজিবাইক, নসিমন-করিমন দুর্ঘটনায় লোকজন প্রাণ হারায়। এর জন্য আমরা ২২টি সড়কে এগুলো নিষিদ্ধ করেছি। কিন্তু অনেক জায়গায় এই নিষেধাজ্ঞা মানা হচ্ছে না। আর ইদানীং নতুন উপদ্রব হচ্ছে মোটরসাইকেল। মোটরসাইকেল কোনও নিয়ম মানে না। প্রতিদিন সড়কে যে দুর্ঘটনা হয়, বেশিরভাগই মোটরসাইকেল। দুই জন তিন জন চড়ে, হেলমেট নেই।

তিনি বলেন, পুলিশ দেখায় কত মামলা হয়েছে, কত জরিমানা করেছে। এগুলো আমার কাছে কোনও বিষয় না। আমার কাছে বিষয় হচ্ছে সড়ক নিরাপদ আছে কিনা, সড়কে দুর্ঘটনা কমেছে কিনা। গাড়ির ফিটনেস আছে কিনা। চালকের ফিটনেস আছে কিনা।

তিনি বলেন, প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে, পাখির মতো মানুষ মরছে। এই মর্মান্তিক দৃশ্যগুলো আমি সইতে পারি না।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মল্লিক ফখরুল ইসলাম, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার।