(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ৮ নভেম্বরের ঘটনা।)
উপকূলীয় এলাকায় সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের মহাবিপদ যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির ভিত্তিতে মোকাবিলার জন্য দেশের সমগ্র প্রশাসনযন্ত্রকে প্রস্তুত রাখা হয়। বঙ্গবন্ধু এর আগে কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেন। এই ব্যাপক প্রস্তুতির উদ্দেশ্য বঙ্গোপসাগরের ঝড় আঘাত হানার পরপরই যেন সম্ভাব্যতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে ক্ষয়ক্ষতি লাঘব করা যায়। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে সাহায্য করার জন্য নৌ ও বিমান বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর নির্দেশে বলেছেন, উপকূলীয় অঞ্চল ও সম্ভাব্য এলাকায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
প্রস্তুতি ছিল, কিন্তু ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়ে পড়ে
উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা কমে আসতে শুরু করে এই দিন। বাংলাদেশের সব বন্দর থেকে মহাবিপদ সংকেত তুলে নিতে বলা হয়। বাসসের খবরে প্রকাশ, ঝড়ের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়— উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা আপাতত কমে আসছে। ঝড় সংকেত কেন্দ্র থেকে জানানো হয় যে ঘূর্ণিঝড় উত্তর দিকে সরে গিয়ে মধ্যরাত ও পরের দিন সকাল নাগাদ ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ মাইল বেগে সুন্দরবন ও পশ্চিমবঙ্গে উড়িষ্যার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোয় ব্যাপকভাবে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত ও একইসঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ মাইল বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানানো হয়।
রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ আন্তরিকভাবে দিল্লি চুক্তি বাস্তবায়ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি এই অভিমত প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জাতিসংঘ এই বিপুল সংখ্যক লোকের বিনিময় গ্রহণ করেছে, যা বাস্তবিকই অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আটক ব্যক্তিদের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে সংস্থাটি যে ভূমিকা গ্রহণ করেছে, রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তার প্রশংসা করেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতি এ ব্যাপারে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল ওয়াল্ড কুট হেইমের ভূমিকার প্রশংসা করেন। রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রতিবেশী সব রাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক স্থাপন করতে ইচ্ছুক।’
বিখ্যাত জাপানি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর ওপরে নির্মিত তিনটি ছবি জাপানি দর্শকদের প্রশংসা লাভ করে। এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধুর ওপর এই তিনটি ছবির নির্মাতা জাপানের সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান।
এদিকে এদিন এক খবর জানানো হয়, জনসংখ্যা বিস্ফোরণ বন্ধ করার তাগিদ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান। খাদ্য ঘাটতি সমস্যা সমাধানের জন্য জনগণকে অধিক শস্য উৎপাদন এবং একইসঙ্গে জনসংখ্যা বিস্ফোরণ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন তিনি। টাঙ্গাইলে এক জনসভায় তিনি বক্তৃতা করছিলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের সাহায্য-সহযোগিতা ব্যতীত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির বিধান করা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়।’ এ প্রসঙ্গে তিনি দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।