স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সংসদে হবে বিশেষ আলোচনা

সরকারের পরিকল্পনায় থাকলেও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে হচ্ছে না জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন। তবে সংসদের আসন্ন অধিবেশনে বিশেষ আলোচনা হবে। এদিকে, কোভিডকালের অন্যান্য অধিবেশনের মতো এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংসদের বৈঠক চলবে। সংসদ সদস্যদের বৈঠকে অংশ নিতে করোনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ সনদ নিতে হবে। সংসদ সচিবালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বর্ণাঢ্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির কর্মসূচি প্রস্তাবনায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আদলে এ বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

মন্ত্রিসভা কমিটির প্রধান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে এ বছর জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত সভায় ৫০টি কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হয়। পরে ফেব্রুয়ারি মাসে তা রেজুলেশন আকারে প্রকাশ হয়। ওই কর্মসূচির মধ্যে ৪ নম্বরে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনের কথা বলা ছিল। এতে ‘বিদেশি রাষ্ট্রনায়কদের সংসদের বিশেষ অধিবেশনে ভাষণ দান’ কর্মসূচি বাস্তবায়নকারী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের কথা বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচির প্রস্তাবনায় থাকলেও সংসদের বিশেষ অধিবেশন হচ্ছে না। তবে আগামী ১৪ নভেম্বর সংসদের যে পঞ্চদশ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে সেখানে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা হবে। যার কারণে আসন্ন অধিবেশন দুই সপ্তাহের মতো পরিচালনা করা হতে পারে। অধিবেশনের শেষ দিকে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সংসদের কার্যপ্রণালি বিধির ১৪৭-এর আওতায় দুই বা তিন দিন আলোচনা হতে পারে।

প্রসঙ্গত, দেশের সংসদের ইতিহাসে গত বছর ৮ নভেম্বর প্রথমবারের মতো বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ওই বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করেছিলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। একাদশ সংসদের দশম ওই অধিবেশনটির প্রথম দিন এবং শেষদিকের ৪টি কার্যদিবস সাধারণ অধিবেশনের মতো হলেও দ্বিতীয় কার্যদিবস থেকে ৫ম দিন বিশেষ অধিবেশন হিসেবে পরিচালনা করা হয়। ওই অধিবেশন আহ্বানের সময় রাষ্ট্রপতি বিশেষ অধিবেশনের কথা উল্লেখ করেছিলেন। অর্থাৎ তিনি বিশেষ অধিবেশন হিসেবেই ডেকেছিলেন।

এদিকে, গত ২৭ অক্টোবর একাদশ সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশন আহ্বান করেছেন রাষ্ট্রপতি। আগামী ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় এই অধিবেশনকে তিনি সাধারণ অধিবেশন হিসেবেই ডেকেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আসন্ন অধিবেশনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংসদের প্রথম কয়েকদিন সাধারণ বিজনেস হিসেবে পরিচালনার পর বিশেষ আলোচনা হবে। অনেকটা মুজিববর্ষের বিশেষ অধিবেশনের আদলে এই আলোচনাটি হবে।

১৪৭ বিধিতে প্রস্তাব এনে আলোচনা হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবারের প্রস্তাবটিও হয়তো সংসদ নেতা আনতে পারেন। অবশ্য এখনও এই বিষয়ে কিছু চূড়ান্ত হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, অধিবেশনটি বিশেষ হচ্ছে না। সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে হয়তো বিশেষ আলোচনা হতে পারে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ণাঢ্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনে গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্পিকার বলেন, তারা বিশেষ অধিবেশনের প্রস্তাবনা হয়তো দিতে পারেন। সিদ্ধান্ত তো তারা নিতে পারেন না।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে সংসদের বৈঠকগুলো যেসব নিয়ম-কানুন ও নির্দেশনার আলোকে হয়েছে, আসন্ন অধিবেশনও সেভাবে হবে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বৈঠকে যোগ দিতে হবে।