সে বছরই বঙ্গবন্ধুর সচিবালয় স্থানান্তর

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ২০ নভেম্বরের ঘটনা।)

১৯৭৩ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শেরে বাংলানগরে নতুন ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় স্থানান্তর করা হবে। এ দিন বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাগুলো জানায় যে, এখানে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন, যা গণভবন নামে পরিচিত হবে। সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর কর্মচারীদের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকবে। সূত্র জানায় যে, নতুন ভবনে বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানানোর জন্য সবরকম ব্যবস্থাপনা সমাপ্ত হচ্ছে।

সুন্দরবনের দুষ্কৃতিকারী নির্মূল অভিযান চলছে

সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ রাইফেলস ও রক্ষীবাহিনী প্রায় এক সপ্তাহ যাবৎ সুন্দরবন অঞ্চলে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দুষ্কৃতকারীরা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রাজত্ব কায়েম করেছিল। দুষ্কৃতিকারীদের সংখ্যা কত হবে— তা সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না। দুষ্কৃতকারীদের মধ্যে কয়েকজন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা, পলাতক রাজাকার ও আলবদর রয়েছে। সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর একটি শক্তিশালী দল অভিযান শুরু করার পর জনমনে আতঙ্কের অবসান হয়েছে। পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ইউনিয়ন কাউন্সিল নির্বাচন বর্জন ও সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দুষ্কৃতকারীরা পোস্টার দিয়েছে।

দৈনিক ইত্তেফাক, ২১ নভেম্বর ১৯৭৩শীর্ষ বৈঠকের খবর সঠিক নয়

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট টিটো জানুয়ারি মাসে শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হবেন বলে যে খবর বেরিয়েছে, তার পেছনে কোনও সত্যতা নেই। ১৯৭৩ সালের এই দিন ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ কথা জানানো হয়। শীর্ষ বৈঠক সম্পর্কে ভারতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওই সূত্রে বলা হয়, এ খবরে কোনও ভিত্তি নেই।

রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প-উৎপাদন বাড়ছে

রাষ্ট্রায়ত্ত কলকারখানাগুলো মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ক্ষতি কাটিয়ে উঠে দ্রুত সর্বোচ্চ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকে এগিয়ে চলেছে। ১৯৭২ সালের প্রথম তিন মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত কলকারখানায় উৎপাদনের যে হার ছিল, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সে হার বেড়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সরকারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। যেসব ক্ষেত্রে উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো সাবান ও বনশিল্প। এই দুই খাতে যেখানে সাড়ে তিন লাখ টাকা লোকসান হয়েছিল, এ বছর সেখানে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান ১৩ লাখ টাকা লাভ করেছে।

ডেইলি অবজার, ২১ নভেম্বর ১৯৭৩বঙ্গবন্ধুর কাছে বাণী

বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যকার মধুর সম্পর্ক দিনে দিনে আরও উন্নতি লাভ করবে বলে দেশটির (ভিয়েতনাম) অস্থায়ী বিপ্লবী সরকারের প্রেসিডেন্ট নগুয়েন হে থো আশা ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের অস্থায়ী বিপ্লবী সরকারের মাঝে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাঠানো বাণীতে বলেন, ‘আমাদের দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক উন্নয়নে এটিকে আমরা আরও একটা চমৎকার পদক্ষেপ বলে মনে করি।’