যৌন হয়রানি রোধে নতুন আইন লাগবে কিনা জানতে চেয়েছে সংসদীয় কমিটি

যৌন হয়রানি বন্ধে নতুন আইনের প্রয়োজন কিনা জানতে চায় সংসদীয় কমিটি। এ বিষয়ে বিদ্যমান সব আইন পর্যালোচনা করে যৌন হয়রানি বন্ধে নতুন আইন প্রণয়নের দরকার আছে কিনা সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছে কমিটি।

রবিবার (৫ ডিসেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে যৌন হয়রানি বন্ধে ২০১১ সালে হাইকোর্ট বিভাগের একটি আদেশে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, সে বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হাইকোর্ট বিভাগ ২০১১ সালে যৌন হয়রানি বন্ধে একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আমরা সেই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। যৌন হয়রানি রোধকল্পে বিদ্যমান আইনের পাশাপাশি নতুন আইনের প্রয়োজনীয়তার আছে কিনা, সে ব্যাপারে আরও যাচাই-বাছাই করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘বিদ্যমান অনেক আইনে যৌন হয়রানি রোধে ব্যবস্থা আছে। এসব দেখে নতুন আইনের দরকার আছে কিনা, সেটার জন্য একটি বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’

২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি যৌন হয়রানি বন্ধে সাত দফা নির্দেশনাসহ রায় দেন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি মো. ইমান আলী ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের দ্বৈত বেঞ্চ।

ইভটিজিং, স্টকিং (অসৎ উদ্দেশ্যে উত্ত্যক্ত) করাকে যৌন হয়রানি হিসেবে বিবেচনা করে আইনের অন্তর্ভুক্ত, প্রতি থানায় পৃথক সেল গঠন করে প্রতিবেদন পেশ এবং সাইবার ক্যাফে মনিটরিংসহ হাইকোর্ট সাত দফা নির্দেশ জারি করেন আদালত। 

সংসদীয় কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান জানান, যৌন হয়রানি বন্ধে সচেতনতা বাড়াতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে একটি বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যৌন হয়রানি ও সহিংসতা বন্ধে সচেতনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেজন্য আমরা এ বিষয়ে আরও কীভাবে কাজ করা যায়, সেলক্ষ্যে তথ্য মন্ত্রণালয় সংসদীয় কমিটির সঙ্গে একটি বৈঠক করবো।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় সহিংসতার পর গণমাধ্যমে লাশের ছবি আসছে। দেখা যায়, সারিসারি লাশের ছবি। এসবের জন্য অনেকের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ে। সে বিষয় নিয়ে করণীয় নির্ধারণেও আলোচনা হবে।’

শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, শামসুল হক টুকু, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, রুমিন ফারহানা, সেলিম আলতাফ জর্জ এবং খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন অংশ নেন।

এছাড়া সংসদীয় কমিটির আমন্ত্রণে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পার্লামেন্টারিয়ানস অন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিপিএডি) পক্ষে সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ, আ স ম, ফিরোজ, আ ফ ম, রুহুল হক, হাবিবে মিল্লাত, শিরিন আক্তার, নাহিদ ইজাহার খান, আদিবা আনজুম মিতা, উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, শামীমা আক্তার খানম বৈঠকে যোগ দেন।