বঙ্গবন্ধুকে বালুচ মুক্তি সংগ্রামীদের অভিনন্দন

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ১৭ ডিসেম্বরের ঘটনা।)

বাংলাদেশের দ্বিতীয় জাতীয় দিবস উপলক্ষে সিন্ধু ও বেলুচিস্তান পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা করিম বালুচ লন্ডন থেকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে অভিনন্দন বাণী পাঠান। ১৯৭৩ সালের এইদিনে পাঠানো বাণীতে তিনি বলেন, ‘ইসলামাবাদের ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে সিন্ধু ও বেলুচিস্তান পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি আপনাকে ও আপনার প্রিয় সহকর্মীদের এবং বাংলাদেশের জনগণকে জানাচ্ছে তাদের গভীর আন্তরিকতাপূর্ণ সৌভ্রাতৃত্বের অভিনন্দন। আপনাদের দুর্জয় সংগ্রাম ও মহান আত্মত্যাগ পৃথিবীর জাতীয় সংগ্রামের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায় রচনা করেছে। ইসলামাবাদের ঘাতক ও হানাদারদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত আমাদের জনগণ আপনাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে দৃর করে তোলার সংগ্রামে এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের নবতর বিজয় কামনা করছে।

ইউপি নির্বাচন শুরু

১৯৭৩ সালের এই দিনে সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শুরু হয়। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী এই নির্বাচন চলবে। আজ  প্রথম দফায় চারটি বিভাগের মোট ৫৩৮টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগে রয়েছে ১৩৬টি ইউনিয়ন, খুলনায় ৯৭টি, ঢাকায় ১৩০টি, আর চট্টগ্রামে ১৬৬টি ইউনিয়ন। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, দেশে মোট ৪ হাজার ৩৯১টি ইউনিয়ন রয়েছে। এগুলোতে  সমসংখ্যক চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং ৩৯ হাজার ১৫৯ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। এরা সবাই নির্বাচিত হবেন জনসাধারণের প্রত্যক্ষ ভোটে। প্রত্যক্ষ ভোটে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন এই প্রথম। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সব মিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা মোট ১ লাখ ৫৭ হাজার ৪৮০ জন।

দৈনিক বাংলা, ১৮ ডিসেম্বর বাস্তবতা মেনে নিন: পাকিস্তান ও চীনের প্রতি তাজউদ্দীন

অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের বাস্তবতাকে স্বীকার করে নেওয়ার জন্য পাকিস্তান ও চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সার্বভৌম ক্ষমতা আর পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে ও বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করতে চায়। পাকিস্তানের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রতিশোধের নীতিতে আমরা বিশ্বাসী নই। যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতিকে আমরা শত্রুতার পর্যায়ে না ফেলে স্বাধীনতার মূল হিসেবে নিয়েছি। সুতরাং, পাকিস্তানের উচিত বাংলাদেশের বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়ে উপমহাদেশের উত্তেজনা হ্রাস করতে এগিয়ে আসা।’ ঢাকার লালকুঠি মিলনায়তনে বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক পরিষদ আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দৈনিক বাংলা, ১৮ ডিসেম্বর ১৯৭৩বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সম্পর্কে তাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘এ মৈত্রী পারস্পরিক স্বার্থ আর আদর্শের ওপর গড়ে উঠেছে।  বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এই বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে রক্তের বিনিময়ে। আমাদের দুটি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির স্বার্থে এই বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হবে। এই বন্ধুত্ব বিনষ্ট করার চেষ্টাকে প্রতিহত করা হবে।’

পাঁচ সালা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে  জাপান

জাপান পার্লামেন্টের সদস্য জাপান- বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির সভাপতি হারাফাওয়া বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় খাদ্যে স্বয়ংবর যে লক্ষ্য নিরূপিত হয়েছে, তা বাস্তবায়নে জাপান সানন্দে সহযোগিতা করবে।’ তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রাক্কালে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য জাপান বাংলাদেশকে কারিগরি সাহায্য দিতে আগ্রহী।’