পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা নিরসনে সিলেট ওয়াসা প্রতিষ্ঠা করা হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সিলেট মহানগরীতে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা নিরসনে শিগগিরই সিলেট ওয়াসা প্রতিষ্ঠা করা হবে। রবিবার (৩০ জানুয়ারি) ‘পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ’ (সিলেট ওয়াসা) গঠনের কার্যক্রম গ্রহণের পরামর্শ সভায় তিনি একথা জানান। অনলাইনে ছিল এই আয়োজন।

পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ-১৯৯৬ অনুযায়ী সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করা হবে।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেট দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর। জনসংখ্যা ও শহর বিস্তৃতির কারণে উন্নততর আবশ্যকীয় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। মহানগরীর জনগণের জন্য পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও গণমুখী সুপেয় পানি সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।’

খুব দ্রুত সিলেট ওয়াসা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, সিলেট মহানগরীতে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (সিলেট ওয়াসা) গঠনের জন্য প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গেজেট নোটিফিকেশন জারি, অর্গানোগ্রাম, চাকরি বিধিমালা প্রণয়নসহ অন্যান্য কার্যক্রম দ্রুত গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দফতর ও সংস্থাকে সভায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

মন্ত্রী উল্লেখ করেন, শহর ও গ্রামাঞ্চলে সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে বাস্তবমুখী টেকসই প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সামগ্রিক পরিবেশ রক্ষায় মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার ভূ-গর্ভস্থ উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ভূ-পরিস্থ পানি ব্যবহারের ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছে। এ লক্ষ্যে শহরাঞ্চলের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের নদ-নদীর পানি ব্যবহার, পুকুর খনন, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিংয়ের মাধ্যমে ভূ-পরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধিসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মনে করেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশেই পানির সমস্যা আছে। নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় বিশ্বের বহু দেশের তুলনায় আমাদের পানি নিয়ে তুলনামূলক সমস্যা কম। এরপরেও আমরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুপেয় পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।’

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এসডিজি অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে ৭০ শতাংশ সারফেস ওয়াটার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ এ সময়ের আগেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শুধু পানি নয়, অন্যান্য খাত নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করায় সব খাতের উন্নয়নে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে।’ 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সভায় অংশ নিয়ে জানান, সিলেটে আগের তুলনায় জনসংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এখানে একটি ওয়াসা প্রতিষ্ঠা করা জরুরি হয়ে পড়েছিল। এ উপলব্ধি থেকে সিলেট ওয়াসা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়ায় তিনি স্থানীয় সরকারমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং দ্রুত বাস্তবায়নে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

সভায় আরও অংশ নেন স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।