বাজেটের তিনটি প্রস্তাব অযৌক্তিক: এফবিসিসিআই

বাজেটের তিনটি প্রস্তাবকে অযৌক্তিক বলছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। প্রস্তাবগুলো হলো—  মওকুফকৃত ঋণের ওপর করারোপ, রফতানি আয়ের ওপর এক শতাংশ উৎসে কর কর্তন এবং উৎপাদকদের কাঁচামাল সরবরাহ ও ব্যবসায়িক পণ্য সরবরাহে উৎসে করারোপের প্রস্তাব।

শনিবার (১১ জুন) মতিঝিল এফবিসিসিআই কার্যালয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

সম্মেলনে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ও বিভিন্ন চেম্বার সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, খেলাপি ঋণ মওকুফ করা হলে তা করযোগ্য আয় হিসেবে গণ্য করা হবে কেন। যদি দুর্ভোগ লাঘবের জন্যই ঋণ মওকুফ করা হয়ে থাকে, তবে সেটার ওপর করারোপ কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।

মো. জসিম উদ্দিন বলেন, রফতানি আয়ের ওপর এক শতাংশ উৎসে কর কর্তনের বিধান যৌক্তিক হয়নি। তিনি রফতানিকারক কর্তৃক রফতানি থেকে প্রাপ্ত অর্থের ওপর আগের মতো ০.৫০ শতাংশ কর রাখার প্রস্তাব করেন।

তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে উৎপাদকদের কাঁচামাল সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ এবং ব্যবসায়িক পণ্যের সরবরাহের ওপর ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। উৎসে কর ফেরতযোগ্য এবং ব্যবসার খরচ বৃদ্ধি করে বলে এটি প্রত্যাহারের জন্য আমরা পুনরায় আহ্বান জানাচ্ছি।

FBCCI on budget

তিনি আরও উল্লেখ করেন, অর্থবিলে রফতানির সংজ্ঞাকে সংকুচিত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক দরপত্রের ক্ষেত্রে ঋণপত্রের পাশাপাশি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে স্থানীয় সরবরাহকে রফতানির সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও করছি।

সোলার প্যানেল আমদানিতে আমদানি শুল্ক এক শতাংশ করা হয়েছে। এটি প্রত্যাহারেরও অনুরোধ করেছেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয়, মুদ্রাস্ফীতি এসব বিবেচনায় আয়করের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত সীমা বাড়ানো হয়নি। প্রস্তাবটি তাই পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাচ্ছি। ভারতে করমুক্ত সীমা ৫ লাখ রুপি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কর বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ভোক্তার ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে ও মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণ করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে এফবিসিসিআই উৎপাদনমুখী খাতসহ নিত্য ব্যবহার্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের পরোক্ষ করে রেয়াত দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোও এ ধরনের শুল্ক ও কর রেয়াতের ব্যবস্থা নিয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে  মূসক, আগাম কর, উৎসে কর, অগ্রিম কর ইত্যাদিসহ আমদানি শুল্কে রেয়াত দেওয়া হলেও সামগ্রিক শিল্প বাণিজ্য খাত এসব শুল্ক সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে অসমতা দেখা দিচ্ছে বলেও জানান মো. জসিম উদ্দিন।