করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে আতঙ্কিত না হলেও চিন্তিত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

করোনা শনাক্তের হার ১৫-১৬ শতাংশে উঠে গেছে। অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন। ঊর্ধ্বগতির এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত না হলেও স্বাস্থ্য বিভাগ চিন্তিত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

রবিবার (২৬ জুন) বিকালে রাজধানীর মহাখালীতে আইসিডিডিআর,বিতে কলেরা টিকা কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, এখন থেকেই আমাদের বিভিন্ন প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে, আমরা সেটা ইতোমধ্যে নিয়েছি। করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ভালো ব্যবস্থা নিয়েছে।  করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় প্রথম স্থানে আছি। কিন্তু আবারও সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। আমরা আতঙ্কিত না হলেও চিন্তিত।

জাহিদ মালেক বলেন, আমরা দেশের টার্গেটকৃত প্রায় সবাইকেই টিকার আওতায় এনেছি। এতে সংক্রমণ এক শতাংশের নিচে চলে এসেছিল। আমাদের মৃত্যুর হার নেই বললেই চলে।

তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমাদের সচেতন হতে হবে। সবাইকেই মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

কলেরা টিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কলেরা ও ডায়রিয়া প্রতিরোধে ঢাকার সংক্রমণপ্রবণ পাঁচটি এলাকার ২৩ লাখ মানুষকে ওরাল ভ্যাকসিন খাওয়ানো হবে। আমরা সব বয়সী মানুষকে এ টিকা দেবো। আমরা প্রথমবারের মতো দেশে এ ভ্যাকসিন দিচ্ছি। এর আগে ট্রায়ালে যেসব এলাকায় টিকা দিয়েছি, সেসব এলাকায় কলেরার প্রাদুর্ভাব একদম কমে গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো আমাদের শ্রমিকদের কলেরার টিকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তারা বলেছে, আমাদের অনেক শ্রমিকের দেহে কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে। তাই করোনা টিকার মতো ভবিষ্যতে আমরা তাদেরও কলেরার টিকা দিয়ে বিদেশে পাঠাব। সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার থেকে আমরা প্রতিটি জেলা-উপজেলা হাসপাতালে কলেরা-ডায়রিয়া ইউনিট চালুর নির্দেশ দিয়েছি।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, দেশের কলেরা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এক সময় কলেরায় সংক্রমণ দেখা দিলে গ্রামের পর গ্রাম খালি হয়ে যেত। রোগীদের পানি খেতে দেওয়া হতো না। কিন্তু এখন আমরা জানতে পারছি, তারা আসলে পানিশূন্যতা ও পুষ্টিহীনতায় মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে সেলাইনসহ নানা আবিষ্কারের ফলে কলেরায় মৃত্যু খুবই কম। দেশে কলেরা মোকাবিলায় আইসিডিডিআরবি,র ভূমিকা অনস্বীকার্য। সাম্প্রতিক সময়ে প্রাদুর্ভাব মোকাবিলাসহ নানা গবেষণার মাধ্যমে তারা কলেরাসহ বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, একসময় গ্রামের পর গ্রাম কলেরায় উজার হয়ে যেতো। এখন সে অবস্থা নেই। অতীতে যেসব এলাকায় সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল, আমরা সেসব এলাকায় কলেরা টিকা দিয়েছি। এবার যেহেতু রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। তাই আমরা এসব এলাকায় টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন আইসিডিডিআরবি,র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহামিদ আহমেদ, ড. মু. শফিকুল ইসলাম, সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও ইনফেকশন ডিজিজ ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. ফেরদৌসী কাদরী প্রমুখ।