‘সামনের পাঁচ বছর গেম-চেঞ্জার’

বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য বলছে, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের দেশজ উৎপাদন ছিল ৬২৯ কোটি ডলার। ২০০৯-এ বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ২০০ কোটি ডলারে। এখন বাংলাদেশের অর্থনীতি ৪০ হাজার কোটি ডলারের সমান। এই প্রবৃদ্ধি আরও এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রাখবে কূটনীতি। সে জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়াই এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্য।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০০৯-১০ সালে বলা হয়েছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি একসময় ৫০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে। ওই সময় এটাকে অবান্তর মনে হয়েছিল। এখন তা বাস্তবে হতে যাচ্ছে। আমার বিবেচনায়, আগামী সাত বছরে বাংলাদেশের রফতানি ১০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে।’

তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে যে, আমাদের অনেক দ্রুত প্রস্তুতি নিতে হবে।’

কোভিড ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অনেক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি সুযোগও তৈরি হয়েছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের সুযোগ অনেক বেশি। প্রচুর বিদেশি কোম্পানি বিকল্প উৎস খুঁজছে।’

বিকল্প উৎসের মধ্যে ভারত বেশি সুযোগ পাবে, এটি ধরে নেওয়া যায়; এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভারতের অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের মুক্ত বাণিজ্য বা অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি আছে।’

তিনি বলেন, ‘শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশও ব্যবসার একটি ভাগ পাবে। আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশের জন্য সত্যিকার গেম-চেঞ্জার হবে।’

চ্যালেঞ্জ

প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। আর তা আকৃষ্ট করাই বড় চ্যালেঞ্জ।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এক্ষেত্রে তিনটি বিষয় জরুরি। প্রথমত, জমির ব্যবস্থা করা। সেটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে হতে পারে। অথবা অন্য জায়গায় হতে পারে। দ্বিতীয়ত, গ্যাস ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা এবং তৃতীয়ত, মুনাফার অর্থ স্বল্প সময়ে ফেরত নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কাজ করছে এমন অনেক বিদেশি কোম্পানির অভিযোগ আছে, তাদের মুনাফার অর্থ ফেরত নিতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়।’

নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ থেকে আট-দশ বছর আগে আমরা আমাদের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা বিদেশিদের জানাতাম। এখন তারাই আমাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলে— তোমরা অনেক ভালো করছো। অর্থাৎ বাংলাদেশ যে ভালো করছে সে বার্তা তাদের কাছে পৌঁছেছে।’