সবাই মিলে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দমন করতে হবে: তথ্যমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘যে অপশক্তি আমাদের মাঝে মধ্যে সাম্প্রদায়িক বানাতে চায়, ফণা তুলে ছোবল মারতে চায়; সেই অপশক্তিকে সবাই মিলে দমন করতে হবে। তাহলে যে চেতনার ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে, সেই ভিত আরও মজবুত করতে পারবো।’

রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে গুলশান-বনানী সর্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘শারদীয় দুর্গাপূজার সূচনা মহালয়া উৎসবে’ তিনি এসব কথা বলেন।

২০০৮ সাল থেকে গুলশান-বনানীতে পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে পূজা হচ্ছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। যেকোনও ধর্ম সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুবই সীমিত। সে কারণে আমি ধর্ম নিয়ে আলোচনায় যাবো না। তবে সব ধর্মে মর্মবাণী যে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন, সমৃদ্ধি স্থাপন এবং মানুষের কল্যাণ, সেটুকু আমি জানি।’

‘সকল ধর্মই মানুষের মাঝে সম্প্রীতি স্থাপনের কথা বলে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ধর্মের এই মূল মর্মবাণী ধারণ করে অনুশীলন করতাম, তাহলে পৃথিবী অনেক শান্তিময় হতো। ধর্মের ভিত্তিতে হানাহানি কখনও থাকতো না।’

‘হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবার সম্মিলিত সংগ্রাম ও রক্তস্রোতের বিনিময়ে আমাদের এই দেশ রচিত হয়েছে’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে আমরা সবাই লড়াই করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। স্বাধীনতার চেতনার বেদিমূলে আঘাত আনা হয়েছে, চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই রাষ্ট্রকে আবার সাম্প্রতিক রাষ্ট্র বানানোর অপচেষ্টা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা কিছুটা সফলও হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার রাষ্ট্রের সেই আঘাতপ্রাপ্ত মূলনীতি পুনরুদ্ধার করতে কাজ করছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যারা এই রাষ্ট্রকে সাম্প্রতিক বানাতে চায়, হানাহানি ও সাম্প্রতিক বিষবাষ্প ছড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে সরকার সবসময় কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। তারপরেও দেশে একটি রাজনৈতিক পক্ষ আছে, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আছে, যারা সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে অপরাজনীতি করে। তাদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

দেশে প্রতি বছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা বাড়ার কথা উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দুটি কারণে এমনটি হচ্ছে। একটি মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে। অন্যটি হলো মানুষের সামর্থ্য বাড়ছে। একই সঙ্গে সরকার আপনাদের পাশে আছে। গত বছর বিভিন্ন জায়গায় গণ্ডগোল করার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও এ বছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে, এটি উৎসাহব্যঞ্জক। এবার আনন্দঘন পরিবেশে পূজা উদযাপিত হবে বলে আশা করি।’