লুটেপুটে খাওয়া ধনীরা চাপে পড়তে সময় লাগবে: পরিকল্পনামন্ত্রী

‘আমরা সব দিকেই এখন ঊর্ধ্বমুখী। সাময়িকভাবে আমরা এখন অর্থনৈতিক চাপে আছি, এটা সারা বিশ্বের সব জায়গায় একই রকম। আমাদের একটু বেশি। কারণ, আমাদের গড়ে সঞ্চিত অর্থ একটু কম। যারা দীর্ঘদিন লুটেপুটে ধনী হয়ে আছে, তাদের গায়ে লাগতে আরও কিছু দিন লাগবে।’

সোমবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে বারডেম হাসপাতালে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

তিনি বলেন, ‘এখন আমরা একটু চাপে আছি। তারপরও আমরা যে পরিমাণ বাজেট ব্যয় করি প্রতিবছর, সেটি অনেক দেশের জন্য ঈর্ষণীয়। আমরা যা ব্যয় করছি, মোটামুটি স্বাস্থ্য খাতে কম নয়। আমাদের পূর্ব পুরুষের তুলনায় তো অনেক বেশি। ২০ থেকে ২৫ বছর আগে তো চিন্তা করতে পারিনি। শুধু স্বাস্থ্য খাতের বাজেট ছিল গোটা উন্নয়ন বাজেটের সমান। এই ব্যয়ে আমরা চাই যেন ভালো ফল আসে।’

প্রতিবেশী দেশের তুলনায় ব্যয় কম করছি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন খাতে আমাদের আরও ব্যয়ের প্রয়োজন আছে, যেটা আছে, সেটা যথেষ্ট নয়। পারসেন্টেজের হিসাবে আমরা তুলনামূলক কম করছি প্রতিবেশী দেশের তুলনায়। নেপাল দেশের আনুপাতিক হারে ব্যয় করে। কিন্তু টাকার পরিমাণে আমরা প্রচুর ব্যয় করি। এটার ফলে লাভও দেখা যায়। গড় আয়ু বেড়েছে, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমে এসেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ অন্যান্য দেশের মতো ডায়াবেটিস নিয়ে সচেতন নয়। আমাদের প্রথমেই ভাতের ওপর নজর থাকে। এখনও ভাতের প্রতি দুর্বলতা আছে আমার। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে বিরাট মূল্য দিতে হয়েছে আমাকে। কয়েক বছর হয়তো আয়ু বেড়েছে, কিন্তু কত ভালো ভালো খাবার খেতে পারলাম না। ত্যাগে যদি কাজ হয়, সেটিই ভালো।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাস্থ্য খাতে অনেক আগ্রহ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তার (প্রধানমন্ত্রী) ইচ্ছা আমরা যেন প্রান্তিক স্বাস্থ্যের দিকে বেশি নজর দিই। উত্তরাঞ্চল, হাওর এলাকা, পার্বত্য এলাকা, উপকূলীয় অঞ্চলে আমরা যেন বেশি ব্যয় করি স্বাস্থ্য খাতে।’

বিশেষজ্ঞদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ যারা আছেন, তারা যেন আদর, স্নেহ, ভালোবাসা একটু বেশি দেন। আমার দফতরে আমি সেই কাগজগুলো আগে ধরি, যেগুলো গ্রামের মানুষের উন্নয়নে যাবে। যদিও এমন কোনও নির্দেশনা নেই, আমি একটু চালাকি করে পল্লি কিংবা মফস্বল এলাকার যদি কোনও প্রকল্প থাকে, যেগুলো কম আয়ের মানুষের কল্যাণে যাবে, বয়স্ক, শিশুদের কল্যাণে যাবে; চেষ্টা করি সেই ফাইল আগে করতে। আমরা চাই স্বাস্থ্য খাতে যাতে বিনিয়োগ, মনোযোগ বাড়ে। যারা কাজ করছেন, তাদের কাজের পরিসর আরও বাড়ে।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান, মহাসচিব মোহাম্মদ সায়েফ উদ্দিন, বারডেম পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক পাঠান প্রমুখ।