হলফনামায়  ‘ভুল তথ্যের’ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই: ইসি

হলফনামায় ‘ভুল তথ্য’ দিয়ে থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি আবদুস সোবাহান মিয়ার (গোলাপ) বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কিছু করণীয় নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। দুর্নীতির কিছু থাকলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দেখবে বলেও জানান তিনি।

রবিবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মাদারীপুর-৩ আসনের এমপি আবদুস সোবাহান গোলাপের হলফনামায় তথ্য গোপন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হলফনামা আমাদের একটা জমা দেবে। কিন্তু সেই হলফনামার সত্য-অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের কোনও কিছু করার আইনগত ভিত্তি নাই। হলফনামা যেটা দেবে সেটা এক ধরনের জাতিকে তথ্য জানানোর মতো দায়িত্ব।’

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘দুর্নীতিমূলক কিছু যদি থাকে দুদক দেখবে। তারা মামলা করবে। রাজস্ব কোর্ট এনবিআর মামলা করতে পারবে। পরবর্তীতে আইনে যেটা আছে সেই আইন অনুযায়ী হবে। একজন সংসদ সদস্যের পদ হারানোর মতো যেসব বিষয় আছে সেটা যদি হয়।’

তিনি বলেন, ‘উনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। ওনার ভোটারদের জানিয়েছেন ওনার নাম কী, শিক্ষাগত যোগ্যতা কী, কী পরিমাণ সম্পদ আছে। আমাদের এখানে কোনও শাস্তির ব্যবস্থা নাই।’

দ্বৈত নাগরিকরা সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের নাগরিকরা পারবেন না। তাদের  বাংলাদেশ নাগরিকত্ব দেখে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা দেখবে। তারা আমাদের বললে আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।’

প্রার্থী ভুল তথ্য দিলে তিনি কোয়ালিফাইড হবেন না জানিয়ে মো. আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচিত হয়ে যান। কেউ যদি চ্যালেঞ্জ না করে এখন উনি নির্বাচিত হয়ে গেছেন। উনি ভুল তথ্য দিয়েছেন এটা বললে হবে না। প্রমাণ করাতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। ব্যবস্থা নেওয়ার পর যখন পাঠাবেন তখন ব্যবস্থা নেবো।’

কমিশনের সীমাবদ্ধতা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সীমাবদ্ধতা না। উনি হলফনামায় ভুল তথ্য দিলে নমিনেশন সাবমিটের আগে জানালে ব্যবস্থা নেবো। হলফনামা যাচাই-বাছাইয়ের আগে অভিযোগ দিলে আমরা দেখবো। মিথ্যা তথ্য মানেই প্রতারণা। প্রতারণার মামলা আছে আলাদা। কোর্ট শাস্তি দিয়ে আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’

গত শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ বা ওসিসিআরপি তাদের ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, সংসদ সদস্য আবদুস সোবাহান গোলাপ যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ে একাধিক বাড়ি কিনেছেন। বিষয়টি নির্বাচনি হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেননি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আবদুস সোবাহান গোলাপ ২০১৪ সালে প্রথম নিউ ইয়র্কে অ্যাপার্টমেন্ট কেনা শুরু করেন। ওই বছর নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় একটি সুউচ্চ ভবনে অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন তিনি। পরের পাঁচ বছরে তিনি নিউ ইয়র্কে একে একে মোট ৯টি প্রপার্টি বা সম্পত্তির (ফ্ল্যাট বা বাড়ি) মালিক হন। এসব সম্পত্তির মূল্য ৪০ লাখ ডলারের বেশি (ডলারের বর্তমান বিনিময় মূল্য অনুযায়ী প্রায় ৪২ কোটি টাকা)।