মাদক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে: সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জিরো টলারেন্স, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর নজরদারি ও মাদকবিরোধী প্রচার-প্রচারণার কারণে মাদকাসক্তি বৃদ্ধি না পেয়ে মাদক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।

সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন তার প্রশ্নে ঢাকা মহানগরীতে প্রতিদিন ইয়াবার চাহিদা প্রায় ১৯ লাখ। বিষয়টি সত্য কিনা। মাদক নির্মূলে সরকারের উদ্যোগ জানতে চান তিনি। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীতে প্রতি দিন ইয়াবার চাহিদা ১৯ লাখের বেশি, এটি সত্য নয়। এটি একটি স্বার্থাম্বেষী মহলের অপপ্রচার। দেশে মাদকের অবাধ প্রবেশের সুযোগ নেই। সীমান্তে বিজিবিসহ দেশের সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাদকের প্রবেশ ও অব্যবহার রোধ করার জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। নিয়মিত অভিযান, মোবাইল কোর্ট ও টাস্কফোর্সের অভিযান পূর্বের চেয়েও বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ সব সংস্থা ২০২১ সালে ৯৩ হাজার ১৯০টি মামলা এবং ২০২২ সালে ১ লাখ ৩২১টি মামলা দায়ের করেছে। এছাড়া ২০২১ সালে ১ লাখ ২২ হাজার ১৫২ জন এবং ২০২২ সালে ১ লাখ ২৪ হাজার ৭৭৫ জন আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে।’

২০২২ সালে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৯ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মাদকদ্রব্য অধিদফতর, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবিসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ব্যাপক কর্মতৎপরতার কারণে মাদক অপরাধীদের গ্রেফতার সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে মাদকদ্রব্য উদ্ধারও বৃদ্ধি পেয়েছে।’

চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের দিকনির্দেশনায় রাজধানী ঢাকায় মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টিসহ ছিনতাইকারী চক্রের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধ/নির্মূল করতে এবং ঢাকায় নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এতে মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টিসহ বিভিন্ন অপরাধী চক্রের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিষ্ক্রিয়/নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, রাজধানীর সড়কের শৃঙ্খলা আনয়নের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরীতে চলাচলরত বিভিন্ন প্রকারের যানবাহনের বিরুদ্ধে আইন অমান্যের জন্য আইন অনুযায়ী প্রসিকিউশন দাখিল করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ গত পাঁচ বছরে ২শ’ ৮৯ কোটি ৮৬ লাখ ৭১ হাজার পাঁচশ’ ১ টাকা আদায় করা হয়েছে।

এর মধ্যে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ ৮২ কোটি ৫৯ লাখ ৯৩ হাজার ৫০৫ টাকা এবং ২০২০ সালে সর্বনিম্ন ২৩ কোটি ১৭ লাখ ৪৪ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। ২০১৮ সালে ৭৮ কোটি ২২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৩৫ টাকা, ২০২১ সালে ৫০ কোটি ৯৩ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৩ টাকা এবং ২০২২ সালে ৫৪ কোটি ৯৩ লাখ তিন হাজার ৭২১ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় হয়েছে বলে জানান তিনি।