ভালো ব্যবহার করার কথা ডিসিদের মনে করিয়ে দিয়েছি: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিসি সাহেবরা যাতে একটু পরিদর্শন করেন, লেখাপড়ার মানটা যাতে একটু ভালো হয়। বিআরটিএ, ভূমি অফিসে, পাসপোর্ট অফিসসহ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিসিদের দৃষ্টি রাখার জন্য বলা হয়েছে। জাতির পিতারও ছিল একই কথা, আর সেটি হলো জনমুখী জনপ্রশাসন। আমাদের ডিসিরা যেন সেবা দেওয়ার মানটা বজায় রাখেন, সেবা একেবারে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পারেন, সেজন্য আমরা কাজ করছি। ওইভাবেই আমাদের নির্দেশনা দেওয়া থাকে।’

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সেবাপ্রার্থীদের সম্মান দেওয়া এবং তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার বিষয়টি জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) মনে করিয়ে দিয়েছি।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারের পঞ্চম বছরে আছি। ডিসি সাহেবদের একটা কথা মনে করিয়ে দিয়েছি, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে জনমুখী জনপ্রশাসনের কথা বলে আসছেন। আমরা জেলা প্রশাসকদের মনে করিয়ে দিয়েছি, জাতির পিতার সেই কথাটি- মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। যারা সেবা নিতে আসছেন, তারা তোমাদের ভাই, তোমাদের আত্মীয়। তাদের সম্মান দিয়ে চলতে হবে। আমরা সেটা মনে করিয়ে দিয়েছি।’

ফরহাদ হোসেন বলেন, একজন ডিসির এখন অনেক দায়িত্ব। সেই দায়িত্বগুলো তিনি স্মার্টলি পালন করছেন। আমাদের এখন লজিস্টিক সাপোর্ট ও ডিসি অফিসে সুবিধা অনেক বেশি। বাজেটের আকার বড়। তাদের কাজও করতে হচ্ছে অনেক বেশি। সারাদেশে এক হাজার ৭০০ প্রকল্প চালু আছে। প্রকল্পগুলো সুন্দরভাবে বাস্তবায়নে ডিসিরা আরও বেশি সম্পৃক্ত হবেন, কাজ করবেন। কাজগুলো সুনিপুণভাবে করতে হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

‘জনগণ যাতে সুন্দর করে সেবাটা পায়। ডিসিদের মধ্যে সুন্দর ব্যবহার করার গুণ থাকতে হবে। একজন ডিসির কাছে এসে সমস্যা বলার জন্য মানুষ যাতে স্বস্তি বোধ করেন। মোটিভেশনাল এ কথাগুলো বলেছি।’ বলেন প্রতিমন্ত্রী।

অ্যালোকেশন অব বিজনেস অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব খাতের বিভিন্ন প্রকল্পের আয়ন-ব্যয়ন গণপূর্ত বিভাগের এ কাজগুলো করার কথা এবং তারাই থাকবে বলেও জানান তিনি।

ইউএনওদের বাসভবনে কর্মচারীদের সংখ্যা বাড়ানো, পাহাড়ি অঞ্চলে বেশি শক্তিসম্পন্ন গাড়ি বরাদ্দ নিয়ে ডিসিদের প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে আমরা একমত। এটি যৌক্তিক দাবি। এটা আমরা আমাদের বিবেচনায় নিয়েছি।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী নির্বাচন ডিসিদের দায়িত্ব পালন নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। আমাদের আলোচনা হয়েছে একজন ডিসি সক্ষমভাবে কাজ করবেন।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ডিসিরা একাধিক মাস্টার্স ডিগ্রি করতে পারবেন। এখন আমরা রাইট ম্যান রাইট প্লেসে পোস্টিং দিচ্ছি। এজন্য আমরা স্মুথলি কাজ করতে পারছি।’

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনের এই ডিসি সম্মেলন আজ শেষ হচ্ছে। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে নিজ কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৩ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৬৪ জেলার ডিসি এবং আট বিভাগীয় কমিশনার এই সম্মেলনে অংশ নেন। জেলা প্রশাসকদের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণসহ ২৫টি নির্দেশনা বাস্তবায়নের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। গত তিন দিনে সম্মেলনের বিভিন্ন সেশনে উপস্থিত হয়েছেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সংশ্লিষ্ট সচিবরা। দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনের আগে এটাই এই সরকারের শেষ ডিসি সম্মেলন।