ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। হামলা ঘটনার জের ধরে দেশজুড়ে তোলপাড়, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার বিবৃতির মধ্যে এ পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছে এই সাংবিধানিক সংস্থাটি। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন পেলে সরকারের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। একজন বিচারকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের এ কমিটি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাংলা ট্রিবিউনের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে অশোক কুমার বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি সংক্রান্ত ফাইল কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির গঠন করবে সরকার। এ জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে কমিশনের প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।’ এরপর সরকারই এ নিয়ে পদক্ষেপ নেবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ঢাকা-১৭ আসনে ভোটের দিন গত ১৭ জুলাই বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে ভোটের পরিস্থিতি দেখছিলেন হিরো আলম। ভোটগ্রহণের শেষ দিকে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে গেলে তিনি হামলার শিকার হন।
এ হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকায় ১২টি দেশের মিশন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। হামলার দুদিন পর বুধবার (১৯ জুলাই) এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আশরাফুল আলমের (হিরো আলম নামে পরিচিত) ওপর হামলার নিন্দা জানাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনও স্থান নেই। আমরা ওই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানাই। আসন্ন নির্বাচনগুলো যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে সবাইকে।’
বিবৃতিদাতা দেশ ও জোট গুলো হলো— যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা, ডেনমার্ক, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
সবশেষ বুধবার আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের বৈঠকেও আলোচনায় উঠে আসে হিরো আলমের ওপরে হামলার প্রসঙ্গ। তার ওপর হামলাকারীদের শাস্তির নিশ্চয়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে ১৪ দলীয় জোটের নেতারা জানিয়েছেন।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, যারা হামলা করেছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।
এ ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন।