সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিএনপিকে শিক্ষা দেবো: প্রধানমন্ত্রী

বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন। সন্ত্রাসীদের কীভাবে শিক্ষা দিতে হবে এবং সেই শিক্ষাটা দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সেটাই আমরা দেবো। এদের জন্য দেশটা ধ্বংস হোক, এটা সহ্য করা যাবে না।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকালে গণভবনে ব্রাসেলস সফর-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপি-জামায়াতের নাম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সন্ত্রাসী এবং বিএনপি যে সন্ত্রাসী দল, সেটা আবার প্রমাণ করলো। কানাডার আদালত এ বিষয়টি কয়েকবার বলেছে। সন্ত্রাসী দল হিসেবে তাদের কর্মীরা কানাডায় প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এদের মধ্যে কোনও মনুষ্যত্ববোধ নেই। তাদের সঙ্গে যতই ভালো ব্যবহার করি না কেন, এদের স্বভাব বদলাবে না। সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদে এরা বিশ্বাস করে। অবৈধ ক্ষমতাটাই এরা ভালো বোঝে।

তিনি আরও বলেন, আর এরা নির্বাচন চায় না। এরা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। মানুষকে কষ্ট দেওয়াটাই এদের চরিত্র। এদের বিষয়ে বলার কিছু নেই। সবাই আমাদের প্রশংসা করে।

২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা মাঝে কিছু রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছিল। সরকার তাতে বাধা দেয়নি, কিছু করেনি। শর্ত ছিল অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করবে না। তারা যখন ধীরে ধীরে মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে শুরু করেছিল, ২৮ অক্টোবর যে ঘটনা ঘটালো, বিশেষ করে পুলিশকে যেভাবে হত্যা করেছে, মাটিতে ফেলে যেভাবে কোপালো, সাংবাদিকদের ওপর যেভাবে হামলা, তাদের পেটালো; এই ঘটনার পর জনগণের ধিক্কার ছাড়া বিএনপির আর কিছুই জুটবে না। তারা পুলিশকে তো মেরেছেই, হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়েছে, পুলিশের ওপর হামলা করেছে। ইসরায়েল ফিলিস্তিনে যেভাবে হামলা করেছে। আমি এদের মধ্যে তফাত তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে নিজেরাই পালালো। পালিয়ে আবার অবরোধের ডাক। কীসের অবরোধ? কার জন্য অবরোধ? যখন বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে, সারা বিশ্ব বাংলাদেশের প্রশংসা করছে। তখন তাদের কাজটা হলো বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। বাংলাদেশে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে দেখানো যে বাংলাদেশে কিছু হয়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি চট্টগ্রামে যখন বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করছি, তখন তারা ঢাকায় মানুষের ওপর হামলা করছে। পুলিশের ওপর হামলা করছে। মানুষ খুন করছে। তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আর সাংবাদিক। গতকালও লালমনিরহাটে যুবলীগের একজনকে পুড়িয়েছে। এভাবে হত্যা করা, মানুষের সম্পদ নষ্ট করার কর্মকাণ্ডই তো তাদের চরিত্র।

সাংবাদিকদের ওপর হামলা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের ওপর তারা যেভাবে চড়াও হলো। বুঝতে পারলাম না কেন হঠাৎ এমন করলো। সাংবাদিকরা তো তাদের পক্ষে ভালো ভালো নিউজ দেয়, টকশোতে সরকারের দোষটাই বেশি দেখে। তাহলে তাদের এত রাগটা কেন সাংবাদিকদের ওপর? সব জায়গায় তাদের নিউজ সবার আগে। আমার নিউজ সবার পরে। কোথাও কোথাও চার-পাঁচ নম্বরেও থাকে। তারপরও কেন তাদের রাগটা? সাংবাদিকদের চিকিৎসার বিষয়টি সরকার দেখবে বলেও জানান তিনি।

যাদের বাস পুড়েছে, তাদেরটা সরকার দেখবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যেসব গাড়ি পুড়িয়েছে, তাদের সহায়তা দেওয়া হবে। ২০১৩ সালেও তারা একই রকম অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। ২০১৪ ও ১৫ সালে একই রকম অবস্থা করেছে। তিনটি বছর ধরে তাদের অগ্নিসন্ত্রাস আর আক্রমণ চলে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত বাস মালিকদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছি, যাতে তারা ব্যবসাটা চালাতে পারে। আহত-নিহতদেরও আমরা সহায়তা দিয়েছি।

আরও পড়ুন:

সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিএনপিকে শিক্ষা দেবো: প্রধানমন্ত্রী

কে চোখ রাঙালো কে বাঁকালো, পরোয়া করি না: শেখ হাসিনা

খুনিদের সঙ্গে কীসের সংলাপ?

বিএনপি সন্ত্রাসী দল, আবারও প্রমাণ হলো: প্রধানমন্ত্রী