পোশাকশ্রমিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

রুটি-রুজির কারখানা ধ্বংস করলে চাকরিটা থাকবে?

পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আলোচনার (মজুরিবৃদ্ধি) পর্যায়ে হঠাৎ তাদের (পোশাকশ্রমিক) মাঠে নামানো এবং সেখানে আবার জ্বালা-পোড়াও করা, কোনও কোনও কারখানায় আগুন দেওয়া…যে কারখানা দিয়ে রুটি-রুজি আসে, সেই কারখানা ধ্বংস করলে তোমাদের চাকরিটা থাকবে কোথায়? সব তো গ্রামে ফিরে যেতে হবে। এটা তো বাস্তবতা।’

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকালে গণভবনে বেলজিয়াম সফর-পরবর্তী আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, হঠাৎ গার্মেন্টস শ্রমিকরা রাস্তায় নেমেছে। ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করি, তখন গার্মেন্টস কর্মীরা কত টাকা মজুরি পেতো? ৮০০ টাকা। আমরা সেটা ১ হাজার ৬০০ টাকা করি। কিন্তু যখন সরকার থেকে চলে যাই, তখন এটি কার্যকর করেনি বিএনপি। কার্যকর করেছিল ২০০৬ সালে এসে। আমরা ২০০৯ সালে সরকারে আসার পর ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে প্রথম ধাপে ৩ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধি করি, দ্বিতীয় ধাপে ৫ হাজার ৩০০ টাকা, তৃতীয় ধাপে ৮ হাজার ৩০০ টাকা করেছি। এই অল্প সময়, মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে তিন দফা তাদের মজুরি বাড়িয়ে ৮ হাজার ৩০০ টাকা করেছি।

তিনি বলেন, শুধু তা-ই নয়, তাদের সন্তানদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থা করেছি। প্রতিটা গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি দত করে দিই। তাদের টিফিনের ভাতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সব রকমের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। করোনাকালীন যখন মালিকরা বেতন দিতে পারছে না, সেই বেতন আমি সরকারের পক্ষ থেকে মালিকদের হাতে না প্রতিটি গার্মেন্টস শ্রমিকের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সমস্ত টাকা তাদের হাতে পৌঁছে দেই। সরাসরি, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তাদের হাতে পৌঁছে দিয়েছিলাম। মালিকদের বিশেষ প্রণদোনা দেই, যাতে ব্যবসাবাণিজ্য চালাতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, জিনিসের দাম, মূল্যস্ফিতি বেড়েছে, এটা তো সবাই জানে। বিশ্বব্যাপী, শুধু বাংলাদেশে না, বাংলাদেশে তো আমরা যে পয়সায় কিনে খেতে পারি বিদেশে কিন্তু সে অবস্থা না, আরও খারাপ অবস্থা। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টায় এক কোটি মানুষকে খাদ্যসহায়তা দিয়েছি। বিশেষ পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি, যাতে সল্প মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকরা যদি রেশন নিতে চায়, মালিকদের সেই ব্যবস্থা করে দেওয়া আছে। তারা কিন্তু অল্প পয়সায় এদের খাদ্যসামগ্রীও দিয়ে থাকে। এই সুবিধাটাও আমরা করে দিয়েছি। এরপর তারা যখন দাবি করেছে, আমাদের শ্রম মন্ত্রণালয় একটা কমিটি করে দিয়েছে, আলোচনা চলছে। সেই আলোচনায় একটা কথা ছিল, এই ডিসেম্বর থেকেই তারা এই মজুরি বাড়ানোর ব্যবস্থা করে দেবে, এ বিষযে কত বাড়বে না বাড়বে, সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

এই আলোচনার পর্যায়ে হঠাৎ তাদের মাঠে নামানো এবং সেখানে আবার জ্বালা-পোড়াও করা, কোনও কোনও কারখানায় আগুন দেওয়া…যে কারখানা দিয়ে রুটি-রুজি আসে, সেই কারখানা ধ্বংস করলে তোমাদের চাকরিটা থাকবে কোথায়? সব তো গ্রামে ফিরে যেতে হবে। এটা তো বাস্তবতা। এদের কারণে সেখানেও দুটি জীবন ঝরে গেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি সত্যি এ জন্য দুঃখ পাচ্ছি।

আরও পড়ুন:

সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিএনপিকে শিক্ষা দেবো: প্রধানমন্ত্রী

সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিএনপিকে শিক্ষা দেবো: প্রধানমন্ত্রী

কে চোখ রাঙালো কে বাঁকালো, পরোয়া করি না: শেখ হাসিনা

খুনিদের সঙ্গে কীসের সংলাপ?

বিএনপি সন্ত্রাসী দল, আবারও প্রমাণ হলো: প্রধানমন্ত্রী